শ্রীজীব বিশ্বাস
তরুণ মুখকে সামনে রেখেই ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে লড়তে নামছে সিপিএম। সেখানে বামেদের প্রার্থী তরুণ আইনজীবী শ্রীজীব বিশ্বাস। বিধানসভা ভোটের সময়ে নন্দীগ্রাম কেন্দ্রেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সিপিএম প্রার্থী করেছিল যুব নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে। মুখ্যমন্ত্রী মমতার বিরুদ্ধে প্রার্থী দিতে না চেয়ে যে ভাবে ভবানীপুর থেকে কংগ্রেস সরে দাঁড়িয়েছে, সেই সিদ্ধান্ত থেকে ভবিষ্যতের সম্ভাব্য বার্তা পড়ে নিয়ে এই উপনির্বাচন থেকেই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে জোট ছাড়া বামফ্রন্টের মঞ্চ থেকে লড়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিতে চাইছেন সিপিএম নেতৃত্ব।
বকুলবাগানের বাসিন্দা শ্রীজীব ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে এসেছেন, পরে আলিপুর আদালতের আইনজীবী মহলে পরিচিত মুখ। ভবানীপুরে ২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা যখন উপনির্বাচনে জিতেছিলেন, তখনই শেষ বার ওই কেন্দ্রে প্রার্থী ছিল সিপিএমের। তার পরে ২০১৬ এবং কয়েক মাস আগের বিধানসভা ভোটে ভবানীপুর কেন্দ্রে কংগ্রেসের হয়ে লড়েছিলেন যথাক্রমে দীপা দাশমুন্সি ও শাদাব খান। ভবানীপুরে ১০ বছর পরে আবার নিজেদের প্রতীকে লড়তে নেমে ভোটের ফলে কোনও বিরাট অঘটনের প্রত্যাশা করছে না সিপিএম। তাদের লক্ষ্য, বিধানসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের পরে সংগঠনকে আবার সক্রিয় করা। এবং সেই সঙ্গেই বৃহত্তর লক্ষ্য, আগামী লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দেওয়া।
কংগ্রেস ভবানীপুরে প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, প্রচারে তারা নামবে না বলেও জানিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিধানসভা ভোটের সময়ে গঠিত সংযুক্ত মোর্চার নাম এই উপনির্বাচনে আর ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বামফ্রন্ট। লড়াই হবে বামফ্রন্টের মঞ্চ থেকেই। মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুরেও বামফ্রন্টের তরফে প্রার্থী থাকছেন যথাক্রমে সিপিএমের মহম্মদ মোদাস্সর হোসেন এবং আরএসপি-র জানে আলম মিঁয়া। কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেতৃত্ব যে পথে এগোচ্ছেন, তাতে লোকসভা ভোটে তাঁরা তৃণমূলের পক্ষেই থাকতে পারেন— ভবানীপুরের সিদ্ধান্ত থেকে তেমনই ধরে রেখে এগোতে চাইছেন সিপিএম নেতৃত্ব। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘ভবানীপুরে যা হল, কংগ্রেসের তরফে সেটাই প্রবণতা হবে বলে মনে হচ্ছে। তা হলে আমাদেরও বিকল্প ভাবনা ভেবে রাখতে হবে। বামফ্রন্টের তরফে লড়াইয়েরই প্রস্তুতি রাখতে হবে।’’
এই উপনির্বাচনে কেন্দ্রের বিজেপি ও রাজ্যের তৃণমূল সরকারের নীতির বিরুদ্ধেই প্রচার চালাতে চায় বামেরা। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তী বুধবার বলেছেন, ‘‘আমাদের লড়াইটা প্রয়োজনের লড়াই। যারা স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেনি, বরং উল্টো কাজ করেছে, তারা এখন দেশের সংবিধানকে তছনছ করছে! বিজেপির হাতে গোটা দেশের যে সর্বনাশ হচ্ছে, তাকে রুখতে হবে। আর রাজ্যে শিক্ষা, কর্মসংস্থান, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য নিয়ে মানুষ যে অসহায়তার মধ্যে আছেন, মানুষের কাছে গিয়ে সে কথা আমাদের বলতেই হবে।’’