ক্ষতিপূরণ ও কর্মসংস্থানের দাবিতে হাবড়া-নৈহাটি সড়ক অবরোধ। রয়েছেন অশোকনগরের তৃণমূল নেতা সমীর দত্ত। ফাইল চিত্র।
উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে তেল প্রকল্প ঘিরে ক্ষতিপূরণ ও কর্মসংস্থানের দাবিতে সোমবার বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন কিছু মানুষ। সঙ্গে ছিলেন এলাকার তৃণমূল নেতা ও প্রাক্তন পুরপ্রধান। বিক্ষোভকারীদের প্রকল্পের গুরুত্ব বোঝাতে এ বার পাল্টা পথে নামল সিপিএম।
অশোকনগরে তেল ও গ্যাসের সন্ধান পেয়েছে ওএনজিসি। বাণিজ্যিক ভাবে তা উত্তোলনের তোড়জোড় চলছে। গত ৬ বছর ধরে পরীক্ষামূলক ভাবে ৪ একর জমিতে কাজ চলার পরে এ বার প্রয়োজন আরও ১২ একর জমি। বেশিরভাগই সরকারি
খাসজমি হলেও কিছু চাষবাস হয় ওই জমিতে। তাঁদের একাংশই হঠাৎ ক্ষতিপূরণ, কর্মসংস্থানের দাবি তুলেছেন। বুধবারও এলাকার তৃণমূল নেতা ও প্রাক্তন পুরপ্রধান বিক্ষোভকারীদের পাশে আছেন বলে জানিয়েছেন।
এই পরিস্থিতি সামাল দিতেই প্রচার শুরু করেছে সিপিএম। বাম আমলে সিঙ্গুরে টাটাদের শিল্প প্রকল্প ঘিরে বিক্ষোভ যখন দানা বাঁধছিল, তখন মানুষকে বুঝিয়েও প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে পারেনি বামেরা। এখন বিরোধী আসনে থেকেও রাজ্যে নতুন শিল্প তৈরির গুরুত্ব নিয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি একই আছে বলে জানাচ্ছেন বাম নেতৃত্বের একাংশ।
বুধবার বিকেলে সিপিএমের অশোকনগর এরিয়া কমিটির সম্পাদক সত্যসেবী করের নেতৃত্ব সিপিএমের লোকজন প্রকল্প সংলগ্ন এলাকায় যান। সোমবার যাঁরা বিক্ষোভ-মিছিলে সামিল হয়েছিলেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। সিপিএম নেতারা বলেন, ‘‘আপনাদের দাবির নিষ্পত্তি ওএনজিসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে হতে পারে। আমরাও চেষ্টা করব ওএনজিসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে।’’ সিপিএম নেতারা মানুষকে বোঝান, ওএনজিসি-র দেওয়া ক্ষতিপূরণ কম মনে হলে রাজ্য সরকারও প্রয়োজনে ক্ষতিপূরণ দিতে পারে।
সোমবারের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে পুরপ্রশাসক, তৃণমূলের প্রবোধ সরকার দাবি করেছিলেন, তা দলীয় কোনও কর্মসূচি ছিল না। বুধবার তিনি বলেন, ‘‘প্রকল্প এলাকার জমি উদ্বাস্তু ও পুনর্বাসন দফতরের। আমরা সব দিক খতিয়ে দেখে ওএনজিসি কর্তৃপক্ষকে জমির নো-অবজেকশন শংসাপত্র দিয়েছি। ছ’বছর ধরে ওখানে কাজ চলছে। এত দিন পরে ক্ষতিপূরণের কথা মনে পড়ল?’’
জীবনপ্রসাদ সিকদার, জীবন মজুমদাররা সোমবারের বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন। এ দিন সিপিএম নেতাদের সঙ্গে কথা বলার পরে তাঁরা বলেন, ‘‘আর অবরোধ করব না। আমরা চাই, এখানে প্রকল্প হোক। আলোচনার মাধ্যমে ক্ষতিপূরণের দাবি তুলব।’’