লিফলেটটি প্রকাশ করেছে সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটি। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের সাসপেন্ডেড নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতে বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রে সরব হল সিপিএম। শনিবার সকাল থেকেই বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রের বিভিন্ন জায়গায় তাঁর বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতে একটি লিফলেট বিলি শুরু করেছে তারা। শুধুমাত্র বেহালা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য এই লিফলেটটি তৈরি করা হলেও, লিফলেটটি প্রকাশ করেছে সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটি। লিফলেটে লেখা হয়েছে, “চোর তাড়াও বেহালা বাঁচাও। চাকরি চোর ঘুষখোর, হাজতবাসী, অপদার্থ বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অপসারণ চাই।”
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায় জামিন পেলে প্রথম কোথায় যেতে চান? বৃহস্পতিবার মামলার শুনানির সময় আদালতে এসেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ। তখনই তাঁকে কিছু ঘনিষ্ঠ ওই প্রশ্ন করেছিলেন। তৃণমূল বিধায়ক পার্থ জানিয়েছেন, নাকতলার বাড়িতে নয়। তিনি প্রথমেই যেতে চান তাঁর কেন্দ্র বেহালা পশ্চিমে, এমনই তাঁর ঘনিষ্ঠদের সূত্রে খবর।
ওই লিফলেটে লেখা হয়েছে কী কী কারণে পার্থ গ্রেফতার হয়েছেন। লিফলেটে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০ বছরের বেশি সময় ধরে বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক থাকা তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব তথা প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থের বর্তমান ঠিকানা প্রেসিডেন্সি জেল। সত্তরোর্ধ্ব বিধায়ক পার্থবাবুর বান্ধবীর দুটি ফ্ল্যাট থেকে ৫০ কোটি টাকা-সহ বহুমূল্যের অলঙ্কার, টেট পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র, অ্যাডমিট কার্ড পাওয়া গিয়েছে। এই দুর্নীতিকাণ্ডে দোসর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য-সহ গোটা শিক্ষা দফতরটাই জেলে চলে গিয়েছে বলে ওই লিফলেটে দাবি করা হয়েছে।
২০০১ সালের পার্থর বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক হওয়ার আগে ১৯৭৭ সাল থেকে বেহালা পশ্চিম আসনটি ছিল সিপিএমের দখলে। ১৯৭৭ সালে ওই আসনে জিতেছিলেন রবীন মুখোপাধ্যায়। ১৯৯১ সালে বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক হন নির্মল মুখোপাধ্যায়। প্রয়াত এই দুই প্রাক্তন বিধায়কের কথা সিপিএমের ওই লিফলেটে উল্লেখ করা হয়েছে। সঙ্গে তাঁদের সততার কথাও তুলে ধরে সিপিএমের তরফে দাবি করা হয়েছে, “শুধুমাত্র লোকঠকানো দলীয় পদ বা মন্ত্রীর পদ থেকে নয়, পরিষেবা এবং উন্নয়নের স্বার্থে আপাদমস্তক দুর্নীতিতে জড়িত পার্থ চ্যাটার্জির বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক পদ থেকে অবিলম্বে অপসারণ চাই।” সিপিএমের এমন উদ্যোগকে সস্তার রাজনীতি আখ্যা দিয়েছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘‘এটা ঠিক হচ্ছে না। আসল কাজ তো করে আমাদের কাউন্সিলররা। সবাই সক্রিয় কাউন্সিলর। বেহালা পশ্চিমে আমাদের ভাল কাউন্সিলররা রয়েছেন। তাঁরাই মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার জন্য কাজ করবেন। এ সব করে সস্তার রাজনীতি করা হচ্ছে। বিধায়ক তো শুধুমাত্র নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে কাজ করেন।’’ সিপিএমকে আক্রমণ করে ফিরহাদ আরও বলেন, ‘‘আমাদের কাউন্সিলররা মানুষের কাছে গিয়ে কাজ করেন। সিপিএমের মতো লোকাল কমিটির নেতা কি বলল, তার ভিত্তিতে কাজ করেন না। তাই কাউন্সিলররাই মানুষকে পরিষেবা দেবে।’’