কলকাতায় সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে। নিজস্ব চিত্র।
আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার পতনের ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবি করল সিপিএম। ওই শিল্প-গোষ্ঠীর শেয়ারে ধস এবং তাদের সম্পত্তির মূল্য কমে যাওয়ার তথ্য প্রকাশ করেছে একটি বিদেশি সংস্থা। প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ওই শিল্প-গোষ্ঠীকে নিয়ে এমন রিপোর্ট সামনে আসার পরেই তা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি। বিজেপি অবশ্য বিষয়টিকে বাজার অর্থনীতির প্রশ্ন বলে চিহ্নিত করে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপের দাবি উড়িয়ে দিয়েছে।
কলকাতায় সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির চলতি বৈঠকে আদানি-কাণ্ড নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাদের যুক্তি, শুধু একটা শিল্প-গোষ্ঠীর সম্পদের মূল্য কমে যাওয়ার প্রশ্ন এটা নয়। এর জেরে দেশবাসীর সঞ্চয় বিপন্ন হয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে। কারণ, ওই সংস্থার মাধ্যমে এলআইসি বা স্টেট ব্যাঙ্কের তহবিল বিনিয়োগ হয়েছে, যেখানে সাধারণ মানুষের জীবনভর উপার্জনের সঞ্চয় রয়েছে। তাই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করছে তারা। কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের বিরতিতে রবিবার আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির দাবি, ‘‘দেশের কোন কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কত অর্থ এমন বিপজ্জনক বিনিয়োগে রয়েছে, তা খুঁজে বার করতে হবে। দায় রয়েছে দেশের অর্থ, বাণিজ্য, বিদেশের মতো একাধিক মন্ত্রকের। তাদের প্রতিনিধিদের রাখতে হবে কমিটিতে।’’
ইয়েচুরির মতে, মোদী সরকারের আমলে যৌথ সংসদীয় কমিটির কোনও কার্যকারিতা রাখা হয়নি। তাই সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হওয়া দরকার। সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু হচ্ছে কাল, মঙ্গলবার। চলবে আগামী এপ্রিল পর্যন্ত। তার মধ্যেই তদন্ত শেষ করে রিপোর্ট পেশের দাবি তুলেছে সিপিএম। দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে এ দিন ইয়েচুরি বলেছেন, কেন্দ্রের উচিত পরিকাঠামোর মতো ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়িয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। মানুষের হাতে টাকা এলে বাজারে অর্থের জোগান ও চাহিদা বাড়বে। সেই সঙ্গে ১০০ দিনের কাজের মতো প্রকল্পে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। কিন্তু বিজেপি সরকার এ সব না করে উল্টে রাষ্ট্রায়ত্ত সম্পদ বিক্রি করছে!
রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য অবশ্য বলেছেন, ‘‘এটা বাজার অর্থনীতির বিষয়। বাজারই সেখানে নিয়ন্ত্রক। কেন্দ্রীয় সরকারের এখানে কিছু করার নেই।’’ ওই রিপোর্টের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নাতীত কি না, সেই প্রশ্নও তুলছে বিজেপি শিবির।