প্রতীকী ছবি।
বিস্তর অভিযোগ, বিতর্ক এবং কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তের জেরে শাসক দল বেকায়দায় আছে ঠিকই। কিন্তু তার মানেই বিরোধী দল হিসেবে তারা এগিয়ে গিয়েছে, এমন মনে করার কারণ নেই। আরও অনেক লড়াই বাকি, তার জন্য দল ও নেতৃত্বের ‘আড়ষ্টতা’ ঝেড়ে ফেলা দরকার। দলের রাজ্য কমিটির বৈঠকে এই সতর্ক-বার্তা জারি করে আন্দোলন ও সংগঠনের ধার বাড়ানোর পরামর্শ দিলেন সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব।
সিপিএমের দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠক শুরু হয়েছে বুধবার। দলীয় সূত্রের খবর, জেলায় জেলায় এখনকার কর্মসূচিতে যে ভাল সাড়া মিলছে, তার উল্লেখ করেই বৈঠকের শুরুতে দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এ দিন বৈঠকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে তৃণমূল কংগ্রেস ‘ব্যাকফুটে’ গিয়েছে। কিন্তু তার মানেই বামেরা ‘ফ্রন্টফুটে’ চলে এসেছে, এটা ধরে নিয়ে বসে থাকলে চলবে না! বিজেপিও এই পরিস্থিতিতে ফের মাথা তোলার চেষ্টা করছে। দলে বা বাম নেতৃত্বের একাংশের মধ্যে এখনও যে ‘রাজনৈতিক আড়ষ্টতা’ (পলিটিক্যাল আর্থ্রাইটিস) রয়ে গিয়েছে, তা কাটাতে হবে। ছেলেমেয়েরা তৈরি আছে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতিতে কোনও ফাঁক রাখা চলবে না বলেও বৈঠকে ফের বার্তা দিয়েছেন রাজ্য সম্পাদক। বুথ কমিটি-সহ যাবতীয় সাংগঠনিক কাজ সেরে ফেলতে হবে। বলা হয়েছে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুধু কেন্দ্রীয় বা জেলা স্তরে প্রতিবাদ হলেই চলবে না। তৃণমূল স্তরেও দুর্নীতির ভূরি ভূরি অভিযোগ আছে, সে সবের তথ্য নিয়ে স্থানীয় মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনে থাকতে হবে। এই সংক্রান্ত কর্মসূচির রূপরেখাও আলিমুদ্দিন স্ট্রিট বেঁধে দিতে পারে বলে দলীয় সূত্রের ইঙ্গিত। প্রথম দিনের বৈঠক শেয করে সন্ধ্যায় বাগুইআটির দুই নিহত ছাত্রের বাড়িতে গিয়েছিল সেলিম, সুজন চক্রবর্তী, পলাশ দাস, মৃণাল চক্রবর্তী, শতরূপ ঘোষ, সৃজন ভট্টাচার্যদের নিয়ে প্রতিনিধিদল। বৈঠকের শেষ দিনে আজ, বৃহস্পতিবার রাজ্য সম্পাদকের জবাবি ভাষণের পাশাপাশি দলের পলিটবুরো সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্রেরও বক্তৃতা করার কথা।
প্রথম দিনের বৈঠকে বিভিন্ন জেলার নেতারা রিপোর্ট দিয়েছেন, আন্দোলন কর্মসূচিতে ভাল সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা আসছেন। তারই পাশাপাশি ‘স্বস্তি’র খবর, গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পরে যে কর্মী-সমর্থকেরা বসে গিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকে আবার দলের ডাকে বেরোচ্ছেন। আন্দোলনের ধারাবাহিকতা বাড়িয়ে এই দুই অংশকেই ধরে রাখার কথা বলেছেন জেলার নেতারা।