বাম-কংগ্রেসের মিছিল।
বাম-কংগ্রেসের যৌথ কর্মসূচি হল পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে। হাজির থাকলেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। দু’জনেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে যৌথ লড়াইয়ের ডাক দিয়েছেন।
খেজুরিতে সিপিএম কর্মী দেবকুমার ভুঁইয়াকে ‘খুনে’র প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার থানায় স্মারকলিপি জমার কর্মসূচি নিয়েছিল বাম-কংগ্রেস। তার আগে হয় মিছিল। আগামী বছর বিধানসভা ভোট। তার আগে করোনা, আমপান-দুর্নীতি নিয়ে রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে বাম ও কংগ্রেস। খেজুরিতে যৌথ কর্মসূচিতে সুজন এবং মান্নানের উপস্থিতিতে কর্মী-সমর্থকদের চাঙ্গা করাই উদ্দেশ্য ছিল দুই দলের। ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটের আগে থেকে পূর্ব মেদিনীপুরে বাম ও কংগ্রেস জোট বেঁধে রাজনৈতিক কর্মসূচি করেছে।
এ দিন মিছিল শেষে পথসভায় সুজন এবং মান্নান দুজনেই আগামী বিধানসভা ভোটে কোমর বেঁধে লড়াই করার আহ্বান। পরে সিপিএমের স্থানীয় নেতৃত্বের তরফে তিন জনের প্রতিনিধি দল হেঁড়িয়া তদন্তকেন্দ্রে স্মারকলিপি দেন। মান্নান বলেন, ‘‘আমপানে লোকদেখানো শাস্তির কথা বলছেন মুখ্যমন্ত্রী। দোষ প্রমাণের পরেও কারও বিরুদ্ধে পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’’ এক ধাপ এগিয়ে সুজনের বক্তব্য, ‘‘আগামী বিধানসভা ভোটে তৃণমূল ক্ষমতাচ্যুত হবে। তারপর আমপান হোক বা সারদা-নারদ, সাধারণ মানুষই তৃণমূলের থেকে টাকা ফেরত নেবেন।’’
এ দিকে, এ দিনের মিছিল থেকে মাঝপথে আচমকা কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে মান্নান বেরিয়ে যাওয়ায় জল্পনা তৈরি হয়। পরে হেঁড়িয়ার উদাখালিতে দলীয় কার্যালয়ে কংগ্রেস কর্মীদের নিয়ে বৈঠকে বসেন মান্নান। সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত, পরে বিজেপি ছেড়ে আসা প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ বর্তমানে কংগ্রেসে রয়েছেন। জানা যাচ্ছে, মান্নানের উপস্থিতিতে কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে লক্ষ্মণ-প্রসঙ্গ ওঠে। সেখান থেকে হেঁড়িয়ায় আয়োজিত পথসভা শুরুর বেশ খানিকক্ষণ বাদে সেখানে পৌঁছন কংগ্রেস নেতা মান্নান ও অমিতাভ চক্রবর্তী। পরে সেখানে দলীয় পতাকা নিয়ে হাজির হন কয়েকজন কংগ্রেসের স্থানীয় নেতা-কর্মীরাও।
লক্ষ্মণকে নিয়ে যৌথ কর্মসূচিতে প্রবল আপত্তি রয়েছে জেলা সিপিএমের অন্দরেও। কয়েক মাস আগে হলদিয়ায় যৌথ লংমার্চ কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকা সত্বেও সিপিএমের আপত্তিতে লক্ষ্মণ বক্তৃতা করতে পারেনি। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হিমাংশু দাস বলেন, ‘‘উনি যৌথ কর্মসূচিতে থাকলে সাধারণ মানুষের কাছে নেতিবাচক বার্তা যেতে পারে। তাই আমরা রাজ্য কংগ্রেস নেতৃত্বকে আগেই জানিয়েছি।’’ খেজুরিতে এ দিনের কর্মসূচিতেও ছিলেন না লক্ষ্মণ। পরে ফোন করা হলে তাঁর বক্তব্য, ‘‘এ দিন কী হয়েছে আমি জানিনা। আর এই জেলায় যৌথ কর্মসূচি নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’