পঞ্চায়েত ভোটে গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ জোটের ডাক দিয়েছে সিপিএম। এ বার বৃহত্তর গণতান্ত্রিক ঐক্যের জন্য পঞ্চায়েত নির্বাচনে দরজা খুলে রাখার কথা বলল সিপিআইয়ের রাজ্য পরিষদও। কংগ্রেস-সহ গণতান্ত্রিক শক্তির সঙ্গে একজোট হয়ে বিজেপি-তৃণমূলকে মোকাবিলার ডাক দিচ্ছে তারাও।
সিপিআইয়ের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, সাম্প্রদায়িক রাজনীতির মোকাবিলায় কংগ্রেসকে ব্রাত্য করে রাখা যাবে না। আগামী এপ্রিলে দলের পার্টি কংগ্রেসে সেই রাজনৈতিক লাইন চূড়ান্ত হওয়ার কথা। তার আগে বৃহস্পতি ও শুক্রবার ভূপেশ গুপ্ত ভবনে দলের দু’দিনের রাজ্য পরিষদের বৈঠকে গণতান্ত্রিক ঐক্যের পক্ষেই সওয়াল করা হয়েছে। সিপিআইয়ের আসন্ন রাজ্য সম্মেলনের যে খসড়া দলিল এ বার রাজ্য পরিষদে আলোচনা হয়েছে, তাতেও অভিমুখ একই। অর্থাৎ একাধারে দলের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক লাইন এবং পঞ্চায়েত ভোটের রণকৌশলে বৃহত্তর গণতান্ত্রিক ঐক্যকেই বেছে নিচ্ছে সিপিআই।
রাজ্য পরিষদের বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে স্থানীয় পরিবেশ ও পরিস্থিতি বিচার করে বামপন্থী ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে একত্রিত করার চেষ্টা করবে সিপিআই। যাতে কোনও অবস্থাতেই কেন্দ্র বা রাজ্যের কোনও শাসক দলই সুবিধা না পায়। বৈঠক শেষ প্রশ্নের জবাবে রাজ্য সম্পাদক প্রবোধ পণ্ডা বলেন, ‘‘দল হিসাবে কংগ্রেসকে আলাদা করে ধরছি না। আজ যে কংগ্রেস, কাল সে-ই তৃণমূল! মানস ভুঁইয়াকে তো দেখলাম। স্থানীয় স্তরে গণতান্ত্রিক শক্তি হিসাবে যারা তৃণমূল এবং বিজেপি-কে রুখতে পারবে, তাদের সঙ্গেই আমরা থাকব।’’
বামেদের সাংগঠনিক শক্তি এখন যা, তাতে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের সব আসনে তাদের প্রার্থী দেওয়ার অবস্থা থাকবে না। সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘জেলা থেকে প্রতিনিধিরা মতামত দিয়েছেন, পঞ্চায়েতে তৃণমূল-বিজেপি’র বিরুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির পক্ষে এক জনই যাতে প্রার্থী থাকে, সেই পরিবেশ তৈরি করতে হবে।’’ রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট যে কোনও সময় ঘোষণা হতে পারে, তা ধরে নিয়েই এ বার রাজ্য সম্মেলন একটু এগিয়ে এনেছে সিপিআই। তমলুকে ২৮ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২৬ তম রাজ্য সম্মেলন হবে তাদের। প্রথম দিন সমাবেশে বক্তা সুধাকর রেড্ডি, গুরুদাস দাশগুপ্ত প্রমুখ।
প্রবোধবাবুদের আশঙ্কা, পঞ্চায়েত ভোট অশান্ত হবে। প্রবোধবাবুর কথায়, ‘‘হুমকির পাল্টা হুমকি তো দিতে পারব না! মানুষকে বলব, সতর্ক থেকে হামলা প্রতিহত করুন।’’