সহগল এবং অনুব্রত। ফাইল চিত্র।
রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল হিসাবে বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। সিবিআইয়ের তথ্য বলছে, গরুপাচার-কাণ্ডে ধৃত সেই সহগল হোসেন এবং তাঁর পরিবারের সদস্যেরা ২০১৫ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে মোট ৫৯টি স্থাবর সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। করিয়েছেন বিপুল টাকার বিমা। কিনেছেন বিপুল পরিমাণে গয়না, দামি গাড়ি।
সহগলের ঠিকানায় তল্লাশি চালিয়ে ইতিমধ্যেই বিপুল পরিমাণে নগদ অর্থ ও গয়না উদ্ধার করেছে সিবিআই। শুধুমাত্র উদ্ধার হওয়া নগদের অঙ্ক প্রায় ৪৪ লক্ষ টাকা। যার অনেকটাই গরু পাচারের লভ্যাংশের টাকায় কেনা বলে তদন্তকারীদের সন্দেহ। কারণ ওই সময়সীমার মধ্যে পুলিশের চাকরি করে সহগলের উপার্জন ২৬ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা। এখন ধৃত অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে সহগলের ওই আয় বহির্ভূত সম্পত্তি ও অর্থের ‘যোগসূত্র’ খুঁজছে সিবিআই।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
সূত্রের খবর, এডিএসআর (অতিরিক্ত জেলা সাব রেজিস্ট্রার) থেকে সিবিআইয়ের সংগ্রহ করা তথ্যে উঠে এসেছে, বীরভূমের বোলপুর, সিউড়ি, ইলামবাজারের পাশাপাশি মুর্শিদাবাদের ডোমকল এমনকি, উত্তর ২৪ পরগনার রাজারহাট এবং বিধাননগরেও রয়েছে সহগল ও তাঁর পরিবারের সম্পত্তি। সেই তালিকায় বাড়ি, ফ্ল্যাট মায় পেট্রোল পাম্পও রয়েছে। যার মূল্য চার কোটি ১০ লক্ষ টাকারও বেশি বলে প্রাপ্ত নথিতে বলা হয়েছে।
সিবিআই সূত্রের খবর, ডোমকলে সহগলের প্রাসাদোপম বাড়ি এবং অন্য ৩৫টি সম্পত্তির মূল্য দু’কোটি ৫৭ লক্ষ টাকারও বেশি। বোলপুরের সাতটি সম্পত্তির মোট বাজারমূল্য এক কোটির বেশি। সিউড়ির সাত এবং বীরভূমের এডিএসআরে নথিভুক্ত চারটি সম্পত্তির মূল্য প্রায় এক কোটি ১৪ লক্ষ টাকা। বীরভূমের ইলামবাজারের সহগল পরিবারের মালিকানাধীন একটি নির্মীয়মাণ পেট্রল পাম্পেরও হদিস মিলেছে।
উত্তর ২৪ পরগনার বিধাননগর এবং রাজারহাট এলাকায় সহগল পরিবারের তিনটি ফ্ল্যাটেরও সন্ধান পেয়েছে। রাজারহাটের দু’টি ফ্ল্যাটের (একটিতে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা-সহ) মোট আনুমানিক দাম ৫৫ লক্ষ টাকারও বেশি। এ ছাড়া তদন্তে সহগলের মালাকানাধীন নিউ টাউনের একটি ফ্ল্যাটের কথাও জানা গিয়েছে।
সহগল ও তাঁর পরিবারের মোট ন’টি বিমার খোঁজ মিলেছে। এ ছাড়া মোট ৪২ লক্ষ টাকা দামের দু’টি গাড়ি, প্রায় ৩৮ লক্ষ টাকার গয়না এবং প্রায় ২২ লক্ষ টাকা ব্যাঙ্ক আমানতের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে সিবিআই তদন্তে। এর আগে গরুপাচার-কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে অনুব্রতকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তাদের দাবি, গরু পাচারকারীদের সঙ্গে সহগলের মাধ্যমেই সম্ভবত যোগাযোগ রাখা হত। অনুব্রতের ফোনও ধরতেন সহগল।