COVID-19 Vaccine

COVID-19 Vaccine: জোগানে ঘাটতি, টিকা না পেয়ে জেলায় জেলায় বিক্ষোভ, নামল পুলিশ, কেন্দ্রকে দুষলেন অরূপ

রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্র পর্যাপ্ত টিকা পাঠাচ্ছে না। তাই এই ঘাটতি। সর্বত্র টিকা দেওয়া যাচ্ছে না।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাওড়া শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২১ ১৭:৫১
Share:

হাওড়ায় বিক্ষোভ চলছে। —নিজস্ব চিত্র।

চাহিদা অনুযায়ী রাজ্যে জোগান নেই করোনা টিকার। আগেই জানিয়েছে রাজ্য। তা নিয়ে এ বার জেলায় জেলায় বিশৃঙ্খলার ছবি ধরা পড়ল। রাত জেগে লাইন দেওয়ার পরও টিকা না মেলায়, বিক্ষোভে নামলেন সাধারণ মানুষ। তাঁদের অবরোধ, বিক্ষোভে দিনভর তেতে রইল বিভন্ন এলাকা। বিক্ষোভ থামাতে পুলিশও নামাতে হল। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, স্থানীয় হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তরফে আগে থাকতে তাঁদের কিছু জানানো হয়নি।

Advertisement

বুধবার সকাল থেকে হাওড়া, বোলপুর, কাকদ্বীপ-সহ একাধিক জায়গা থেকে এমনই বিক্ষোভের ছবি উঠে এল। হাওড়ায় ৪ নম্বর বোরো অফিসের সামনে টিকা নেওয়ার জন্য রাত থেকে লাইনে পড়েছিল। সকাল ৮টা নাগাদ অফিস খুললেও, টিকাকরণ শুরু হয়নি বলে অভিযোগ। বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, অফিসের ঢুকেই ফটকে নোটিস ঝুলিয়ে দেন কর্মীরা যে পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত টিকাকরণ বন্ধ থাকবে সেখানে। তার পর লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের সঙ্গে কোনও কথা না বলেই, তালা ঝুলিয়ে কর্মীরা বেরিয়ে যান বলে অভিযোগ।

টিকা নিতে আসা প্রিয়ঙ্কা ঘোষ বলেন, ‘‘রাত দেড়টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। কুড়ি নম্বরে নাম ছিল। কিন্তু টিকা পেলাম না।’’ গোটা ঘটনায় বোরো অফিসের সামনে উত্তেজনা ছড়ায়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।

Advertisement

কাকদ্বীপে বিক্ষোভকারীদের আশ্বস্ত করছেন এক পুলিশ আধিকারিক। —নিজস্ব চিত্র।

একই ঘটনা চোখে পড়ে বোলপুর সিয়ান মহকুমা হাসপাতালের টিকাকেন্দ্রে। আশেপাশের গ্রাম থেকে আসা মানুষ ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু বেলার বাড়তে হাসপাতালের তরফে টিকা নেই, এমনটা জানানো হয় বলে অভিযোগ সকলের। তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে হাসপাতালের ফটক ধরে ঝাঁকাতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা। হাসপাতালের কর্মীদের সঙ্গে বচসাও বাধে তাঁদের। দুপুর ৩টে পর্যন্ত টানা বিক্ষোভ চলে। বেগতিক দেখে পুলিশে খবর দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারা এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এবং একটানা বৃষ্টির পর সমুদ্রে যাওয়ার অনুমতি পেলেও, কাকদ্বীপের মৎস্যজীবীদের অধিকাংশেরই টিকাকরণ হয়। তাই মাছ ধরতে ভিন্ রাজ্যেও যেতে অসুবিধা হচ্ছে তাঁদের। কাকদ্বীপের অনেক মৎস্যজীবী কেরলে মাছ ধরতে যান। আঘামী কয়েক সপ্তাহেই রওনা দেওয়ার কথা তাঁদের। অনেকে টিকিটও বুক করে ফেলেছেন। কিন্তু টিকা না পেলে আদৌ যেতে পারবেন কি না সংশয় দেখা দিয়েছে।

তাই ঋষি প্রতাপাদিত্যনগর পঞ্চায়েতের টিকাকরণ কেন্দ্রে ভিড় উপচে পড়েছিল। কিন্তু সারা সকাল দাঁড়িয়ে থেকেও টিকা মেলেনি। তাতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন সকলে। পরে পুলিশ এসে আশ্বস্ত করলে বিক্ষোব উঠে যায়। স্থানীয় প্রশাসনের তরফে সকলকে আশ্বাস দেওয়া হয়য়েছে। তবে অভিযোগ, মৎস্যজীবীদের টিকা দেওয়ার ব্যাপারে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে কিছু জানায়ইনি পঞ্চায়েত। ব্লক প্রশাসন পরিযায়ী মৎস্যজীবীদের তালিকা স্বাস্থ্য দফতরে পাঠালে তবেই তাঁদের টিকাকরণ শুরু হবে। কিন্তু কেন এই ঢিলেমি, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।

দিন ভর জায়গায় জায়গায় টিকার জন্য এই বিক্ষোভ নিয়ে মুখ খুলেছেন রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্র পর্যাপ্ত টিকা পাঠাচ্ছে না। তাই এই ঘাটতি। সর্বত্র টিকা দেওয়া যাচ্ছে না।’’ বিক্ষোভ নিয়ে হাওড়া পুর নিগমের প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য ভাস্কর ভট্টাচার্যের জানিয়েছেন, বোরো অফিসের সামনে যে ঘটনা ঘটেছে, কেন আগে থেকে বিষয়টি জানানো হয়নি, বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন তাঁরা।

বোলপুরের সিয়ান মহকুমা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার দীপ্ততেন্দু দত্ত বলেন, ‘‘২৯ জুন প্রায় ৫০০ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। আজ ৩৪০ জন টিকা পেয়েছেন। লাইনে দাঁড়ানো কিছু লোক টিকা পাননি। হাসপাতালে টিকা মজুত নেই বলেই টিকা দিতে পারিনি। মানুষ ভাবছিলেন টিকা থাকা সত্ত্বেও দেওয়া হচ্ছে না। তা-ও আমরা চেষ্টা করছি। লাভপুর, নানুর, বোলপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে টিকা সংগ্রহ করতে লোক পাঠিয়েছি।’’

কাকদ্বীপের অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অভিরুপ মণ্ডল বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের নিয়ম মেনে যাঁদের থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভআবনা সবচেয়ে বেশি, তাঁদের আগে টিকা দেওয়া হচ্ছে। পঞ্চায়েত পরিযায়ী মৎস্যজীবীদের টিকা দেওয়ার বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতরকে জানায়নি। তালিকা পাঠালে তবেই টিকাকরণ শুরু হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement