চুঁচুড়া পুরসভা পরিচালিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকাকরণের জন্য এলাকাবাসীর ভিড়। সোমবার। ছবি: তাপস ঘোষ
করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে হুগলিতে। সোমবার পর্যন্ত জেলায় করোনার চিকিৎসা হয়েছে একমাত্র ব্যান্ডেল ইএসআই হাসপাতালে। সেখানে রোগী বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে আজ, মঙ্গলবার থেকেই করোনা চিকিৎসার পরিকাঠামো আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
ওই সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে এ দিন জেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে সরকারের তত্ত্বাবধানে করোনা চিকিৎসার পরিকাঠামো তৈরির আর্জি জানান বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। বিরোধী দলনেতার প্যাডে হুগলির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তীকে একটি চিঠি দেন মান্নান। তাতে সার্বিক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে তাঁর আবেদন, জেলার সরকারি হাসপাতালগুলিতে পর্যাপ্ত কোভিড-শয্যার বন্দোবস্ত করা হোক। একই সঙ্গে নির্দেশিকা দিয়ে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমেও কোভিড-ওয়ার্ড খোলার ব্যবস্থা করার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার রাতে প্রকাশিত রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনে দেখা যাচ্ছে, এই জেলায় অ্যাক্টিভ আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১১৯২ জন। রবিবারের থেকে এই সংখ্যা ১৪০ জন বেশি। রবিবার সকাল থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত হয়েছেন ২৯০ জন। অর্থাৎ, দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা এ বার তিনশোর কাছে এসে দাঁড়াল।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী জানিয়েছেন, আজ, মঙ্গলবার আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ৩০টি শয্যা চালু করা হচ্ছে। সিঙ্গুর ট্রমা কেয়ার সেন্টারে ১০টি সিসিইউ এবং ৬০টি সাধারণ শয্যা চালু করা হচ্ছে। চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে ১৫টি এইচডিইউ ‘সারি’ শয্যা চালু করা হচ্ছে। কাল, বুধবার চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে ৩০টি সাধারণ ‘সারি’ শয্যা চালু করা হবে। আগামী বৃহস্পতিবার শ্রীরামপুর ওয়ালশ, চুঁচুড়া ইমামবাড়া জেলা সদর এবং উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ৩০টি করে ‘সারি’ শয্যা চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী ২০ তারিখে চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে আরও ১৫টি এইচডিইউ এবং সিঙ্গুর ট্রমা কেয়ারে ১০টি সিসিইউ শয্যা চালু করা হবে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, করোনার উপসর্গ রয়েছে, অথচ পরীক্ষা করা হয়নি বা পরীক্ষার রিপোর্ট মেলেনি এমন রোগীদের ‘সারি’ ওয়ার্ডে ভর্তি করা হবে। পরীক্ষায় সংক্রমণ নিশ্চিত হলে করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসা মিলবে। মান্নান বলেন, ‘‘উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে না তুললে এই অতিমারিকে প্রতিরোধ করা কঠিন হবে।’’
করোনার প্রথম পর্বে বিভিন্ন ক্লাব-সংগঠনের তরফে সংক্রমিত রোগীদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। একাধিক সংগঠনের সদস্যরা জানিয়েছেন, হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা-সহ নানা বিষয়ে পরামর্শের অনুরোধ জানিয়ে সংক্রমিত লোকজন বা তাঁদের আত্মীয়-পরিচিতরা যোগাযোগ করছেন। গত দু’-তিন দিনে এই ধরনের সাহায্যের জন্য অনুরোধ ক্রমেই বাড়ছে। সাধারণ মানুষের কাছে স্বাস্থ্য দফতরের আবেদন, সকলে যেন স্বাস্থ্যবিধি যথাযথ ভাবে মেনে চলেন।