করোনা পরীক্ষা এবং টিকা নেওয়ার ভিড় বাড়ছে হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র।
করোনা টিকাকরণ অভিযানের মধ্যেই দেশজোড়া সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ পৌঁছল ডুয়ার্সে। প্রতিটি জেলাতেই নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে। ধূপগুড়ি পুর এলাকায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭ জন। যাঁদের মধ্যে একজন তৃণমূল কাউন্সিলর এবং একটি পরিচিত সোনার গয়নার বিপণির ৪ জন কর্মী রয়েছেন।
সামগ্রিক ভাবে মালবাজার মহকুমা এলাকায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৯ জন। মৃত্যু হয়েছে ১ জনের। স্বাভাবিক ভাবেই আতঙ্ক বাড়ছে ডুয়ার্সে। তবে এখনো সতর্ক নন এক শ্রেণির মানুষ। মানা হচ্ছে না করোনা-বিধি। মাস্ক না পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখার ঘটনা নিয়মিত দেখা যাচ্ছে। তাই চিন্তিত স্বাস্থ্য দফতর।
তবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তেই টিকা নেওয়ার ভিড় বেড়েছে বিপুল। বিধানসভা নির্বাচনের আবহের মধ্যেই হাসপাতালগুলিতে করোনা পরীক্ষার দীর্ঘ লাইন চোখে পড়ছে। অভিযোগ, সেখানেও মানা হচ্ছে না কোভিড-বিধি । এমনকি, অনেকেই মাস্ক ছাড়া হাসপাতালে ঘোরাঘুরি করছেন। জটলা করছেন। দূরত্ব না মেনেই পাশাপাশি বসছেন।
৪ কর্মীর সংক্রমণের পরে ধূপগুড়ির ওই গয়না বিপণিটি বন্ধ করা হয়েছে। তবে জানা গিয়েছে আক্রান্তদের প্রত্যেকেই সুস্থ রয়েছেন এবং তাঁদের কোনও উপসর্গ নেই। পাশাপাশি, ধূপগুড়ি পুরসভার কোভিড আক্রান্ত কাউন্সিলর-সহ অন্যেরা সুস্থ রয়েছেন এবং নিভৃতবাসে আছেন। ওই বিপণির কর্মী রিঙ্কি দাস মঙ্গলবার বলেন, ‘‘আমাদের শোরুমের চারজন কর্মী আক্রান্ত। তাই আমরা সকলে করোনা পরীক্ষা করিয়েছি। তবে সকলেরই রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। কিছুটা হলেও আতঙ্কে রয়েছি।’’
জেলার করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী আনজুমা বেগম বলেন, ‘‘হাসপাতালে টিকা দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। ১৫০০ টিকা এসেছে তার মধ্যে বানারহাট হাসপাতালে ৭০০টি পাঠানো হয়েছে এবং বাকি ৮০০ ধূপগুড়িতে আছে। যতক্ষণ মানুষ টিকা নিতে আসবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত দেওয়া হবে।’’
টিকা নিতে আসা শিক্ষক সমীর বসু বলেন, ‘‘প্রথম টিকা আগেই নিয়েছিলাম। দ্বিতীয়টি আজকে নিলাম। করোনা যেভাবে বাড়ছে তাতে প্রত্যেকের সচেতন হওয়া প্রয়োজন।’’ ধূপগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান রাজেশ সিংহ বলেন, ‘‘নতুন করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে এটা অবশ্যই চিন্তার বিষয়। এর আগেও পুরসভা যেমন সাধারণ মানুষের পাশে ছিল, এ ক্ষেত্রেও যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার তা নেওয়া হবে।’’
মঙ্গলবার মালবাজার মহকুমার ওয়াসাবাড়ি চাবাগানে শ্রমিকদের টিকা দেওয়া শুরু হয়। প্রায় ৬০০ শ্রমিককে টিকা দেওয়া হবে বলে ওয়াসাবাড়ি চা বাগানের ম্যানেজার রাজকুমার মণ্ডল জানান। তিনি বলেন, ‘‘যে ভাবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বারছে, তাতে আমরা চিন্তিত। সেই কারণে আমরা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে, চাবাগানে টিকা দেওয়ার আবেদন জানাই। অবশেষে স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে মঙ্গলবার সকাল থেকে চা বাগানের হাসপাতালে শুরু হয়েছে শ্রমিকদের করোনা টিকা দেওয়ার কাজ। আমাদের আশা, এতে শ্রমিকেরা নিরাপদ থাকবেন।’’