প্রতীকী ছবি।
মারধর, খুন ও ধর্ষণের হুমকির অভিযোগ জানাতে থানায় গিয়েছিলেন এক মহিলা। কিন্তু তাঁর পুলিশ অভিযোগ নেয়নি বলে জানাচ্ছেন তিনি। অভিযোগ, উল্টে তাঁকে স্থানীয় বদনগঞ্জ ফাঁড়িতে আটকে রেখে মারধর করা হয়েছে। বিদ্যুতের শক দেওয়া হয়েছে তাঁর দেওরকে। তার পর থেকে মহিলার দেওর শয্যাশায়ী। মহিলা অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন পঞ্চায়েতের কাছেও। অভিযোগ, সালিশি সভা বসিয়ে মহিলাকেই দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং মহিলাকে বিবস্ত্র করেন পঞ্চায়েত প্রধান ও তাঁর সহযোগীরা।
অভিযোগ, এত কিছুর পরেও গত এক বছরে পুলিশ-প্রশাসনের উচ্চ স্তরে আর্জি জানিয়ে সুরাহা হয়নি। শেষ পর্যন্ত কলকাতা হাই কোর্টে গিয়েছেন মহিলা। তাঁর আইনজীবী শিবাঙ্গী চট্টোপাধ্যায় জানান, এই ঘটনায় মূল অভিযোগ হুগলির গোঘাটের বদনগঞ্জ ফাঁড়ির ওসি এবং স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে। বুধবার মামলাটি শোনার পরে বিচারপতি দেবাংশু বসাক মৌখিক ভাবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার সঙ্গে যুক্ত সব পক্ষের তরফে হলফনামা তলব করেছে আদালত। ৪ অগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
শিবাঙ্গী জানান, ঘটনার সূত্রপাত গত বছরের ২৪ মে। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান মহম্মদ গিয়াসুদ্দিন দলবল নিয়ে আচমকাই তাঁর মক্কেলের বাড়িতে চড়াও হন এবং মক্কেলের ছেলে স্থানীয় এক মহিলার সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলে মারধর শুরু করেন। অভিযোগ, মহিলার চুলের মুঠি ধরে মারতে মারতে ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। হুমকি দেওয়া হয় অকথ্য ভাষায়। পরের দিনেও বাড়িতে চড়াও হয়ে একই ঘটনা ঘটায় ওই অভিযুক্ত।
মামলার আবেদনপত্রে বলা হয়েছে, মহিলা থানায় গেলেও অভিযোগ নেওয়া হয়নি। উল্টে বদনগঞ্জ ফাঁড়ির ওসি স্বপন গোস্বামী মহিলাকে ফাঁড়িতে দু’দিন আটকে রেখে মারধর করেন। পরে তাঁকে এবং তাঁর দেওরকে ফের ফাঁড়িতে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়। বিদ্যুতের শক দেওয়ার পর থেকে তাঁর দেওর শয্যাশায়ী। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, মহিলার বাড়ি থেকে ফাঁড়ির ওসি একটি মোটরবাইক বাজেয়াপ্ত করেন এবং সেটিতে চেপে তিনি এলাকায় ঘুরে বেড়ান। অভিযোগ, গত এক বছরে স্থানীয় পঞ্চায়েত ও পুলিশ মাঝেমধ্যেই মহিলাকে এ ভাবে হেনস্থা করেছে। তাঁর বাড়ির পানীয় জলের সংযোগও কেটে দেওয়া হয়েছে।
শিবাঙ্গী বলেন, “এক বছর ধরে এ রাজ্যে এমন ঘটনা ঘটলেও প্রশাসন নির্বিকার। তাই আমরা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হয়েছি। আশা করছি, এ বার অন্তত ন্যায্য বিচার পাব।”