রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।
আদালতের নির্দেশের বাইরে গিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে অতিরিক্ত মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হয়েছে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। শুনে বিচারকের প্রশ্ন, ‘‘কেন এমন করেছে এসএসকেএম হাসপাতাল? প্রাক্তন মন্ত্রী প্রভাবশালী বলেই কি এটা সম্ভব হয়েছে?’’
ঘটনার সূত্রপাত বুধবার। রেশন দুর্নীতিতে অভিযুক্ত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়ের শুনানি ছিল নিম্ন আদালতে। সেখানেই জ্যোতিপ্রিয়ের শারীরিক অবস্থা নিয়ে তাঁর আইনজীবীর সঙ্গে বিচারকের কিছু বাক্য বিনিময় হয়। পরে রাজ্যের অন্যতম সরকারি হাসপাতাল এসএসকেএমের ভূমিকা নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেন বিচারক।
আদালতে জ্যোতিপ্রিয় (যিনি বালু নামেও সমধিক পরিচিত)-এর আইনজীবী যুক্তি দিয়ে বোঝাচ্ছিলেন, কেন বালুর জেলে সুস্থ থাকা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘‘জ্যোতিপ্রিয় অত্যন্ত অসুস্থ। ওঁর ওজন দিন দিন কমে যাচ্ছে।’’
জবাবে বিচারক বলেন— আপনার মক্কেলের তো স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোনও বড় সমস্যাই নেই। সব ক্রনিক রোগ। কিডনির রোগও ক্রনিক।
আইনজীবী— ওঁর সুগার ২৯০! আর আপনি বলছেন কিছু না!
বিচারক— রিপোর্টে যা দেখা যাচ্ছে তাতে উনি তিন মাস আগেও যেমন ছিলেন, এখনও তেমন আছেন।
আইনজীবী— ওঁর ওজন কমছে। তা ছাড়া চিকিৎসকেরা ওঁকে যে ভাবে দিনে চার বার মনিটরিং করতে বলেছেন, তা জেলে সম্ভব নয়। এ খানে ওঁকে কে মনিটর করবে?
এর পরই বালুর রিপোর্ট দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারক। তিনি জানান, অর্ডারে যে পরীক্ষা করানোর কথা বলা হয়েছিল, তা সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা ছিল। কিন্তু এসএসকেএম তার ভুল মানে করেছে।
বিচারক তাঁর পর্যবেক্ষণে এ-ও জানান যে, বালুর আইনজীবী যে মেডিক্যাল পরীক্ষা করানোর কথা বলেছিলেন, তার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আদালত সন্দেহ প্রকাশ করেছিল। অথচ এসএসকেএমে সেই পরীক্ষা করানো হয়েছে। বিচারকের কথায়, ‘‘২৭ জানুয়ারির পর কী কী পরীক্ষা করতে হবে, তা স্পষ্ট করে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। তার বাইরে গিয়েও বেশ কিছু পরীক্ষা করা হয়েছে।’’ বিচারক দৃশ্যতই এ ব্যাপারে উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, জ্যোতিপ্রিয় প্রভাবশালী বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। সেই জন্যই আদালতের নির্দেশের বাইরে বাড়তি পরীক্ষা করিয়েছে এসএসকেএম।