আল্পনা বিশ্বাস এবং প্রদীপ বিশ্বাস। গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
নরেন্দ্রপুরে দম্পতি খুনের রহস্য ক্রমশ ঘনিভূত হচ্ছে। কী কারণে ওই খুন,তা এখনও স্পষ্ট নয়। যদিও পুলিশের অনুমান, ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরেই ওই দম্পতি খুন হয়েছেন।
একইসঙ্গে নরেন্দ্রপুরের ওই জমিতে ব্যবসা সংক্রান্ত কোনও কারণ থাকতে পারেও বলে তদন্তকারীদের ধারণা। আততায়ীরা ওই দম্পতি অথবা বাড়ির মালিকদের পরিচিত কেউ হতে পারে। খুনের ঘটনায় সুপারি কিলারদের জড়িত থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা।
বুধবার নরেন্দ্রপুরের খেয়াদহ ২ নম্বর গ্রামপঞ্চায়েতের তিউড়িয়ার ওই বাগানবাড়িতে গিয়ে ফরেন্সিক দল নমুনা সংগ্রহ করে। পুলিশ সূত্রে খবর, খুনের পর সুটকেসে ভরে দেহ লোপাটের চেষ্টা করেছিল আততায়ীরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই চেষ্টা ব্যাহত হয়। বিভিন্ন জায়গায় পাওয়া রক্তের নমুনা থেকে তা অনুমান করছে পুলিশ। এমনকি ঘরে রক্তের দাগ মুছে ফেলার চেষ্টাও হয়েছে। নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, প্রথমে তাঁদের শ্বাসরোধ করার চেষ্টা হয়েছে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে শাবল জাতীয় কিছু দিয়ে মাথায় বারবার আঘাত করা হয়।
এ দিন ফরেন্সিক দল জানলা, দরজা এবং ঘরের বিভিন্ন অংশ থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন। ঘরে থাকা আড়াই হাজার টাকাও পাওয়া গিয়েছে। ঘরে ধস্তাধস্তির চিহ্ন স্পষ্ট। খুনের সময় দুই থেকে তিনজন ছিল বলে মনে করছে পুলিশ। খুনের পর থেকে প্রদীপ বিশ্বাস এবং আল্পনা বিশ্বাসের মোবাইল ফোন নিয়ে গিয়েছে আততায়ী। যে ভাবে তাঁদের খুন করা হয়েছে, তা থেকে পুলিশের অনুমান, এই ঘটনায় দাগি দুষ্কৃতীরাও জড়িত থাকতে পারে।
আরও পড়ুন: এনএমসি বিলের প্রতিবাদে একদিনের চিকিৎসা ধর্মঘট, বন্ধ আউটডোরে ভোগান্তির অপেক্ষা
কেন খুন হলেন নিঃসন্তান ওই দম্পতি? সে কারণ খুঁজতে গিয়ে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই বাগানবাড়ি পৌনে চার বিঘা জমির উপরে রয়েছে। এক জন নয়, জমির মালিক অনেকেই। যদিও স্থানীয়রা জানতেন ওই বাগানবাড়ির মালিক দীপঙ্কর দে। দেখাশোনার জন্যে তিনি শ্যালিকা অল্পনা এবং ভায়রাভাই প্রদীপকে সেখানে থাকতে দিয়েছিলেন। গত ২২ বছর তাঁরা ওখানেই থাকতেন।
স্থানীয় একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, ওই জমিতে ব্যবসা করতে চেয়ে অনেকেই প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে অন্য কেউ কিছু করুক, তা চাইতেন না ওই দম্পতি। উল্টে প্রদীপ ও আল্পনা ওই জমিতে ব্যবসা করতে চাইছিলেন। এই গোলমালের জেরেই কি খুন হতে হল প্রদীপ এবং আল্পনাকে? কারা ব্যবসার জন্যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন? ওই দম্পতির ব্যবসা করতে চাওয়ায়, কারও তরফে কী বাধা এসেছিল? পুলিশ সূত্রে খবর, স্থানীয় কয়েকজনকে জিজ্ঞাসবাদের পাশাপাশি ওই জমির মালিকদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: লাগাতার হুমকি, ফিরেও একঘরে পাচার-কন্যেরা