প্রতীকী ছবি।
ডানকুনিতে আইএফবি অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের দিশি মদের কারখানায় তৈরি ‘জয়’ ব্র্যান্ডের মদে তামা এবং মিথাইল অ্যালকোহল মিশে থাকার প্রমাণ মিলেছে। ওই মদ পান করলে শরীরে বিষক্রিয়া হতে পারে বলে আবগারি দফতরের আশঙ্কা। কারণ, ইথাইল অ্যালকোহল কোনও ভাবে মিথাইল অ্যালকোহলে পরিণত হলেই মদে বিষক্রিয়া হয়। বিষমদে মৃত্যুর ঘটনাগুলি সবই মিথাইল অ্যালকোহল পানের ঘটনা বলে জানাচ্ছেন আবগারি কর্তারা। তার পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার সন্ধ্যায় ডানকুনির কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হুগলির জেলাশাসক।
জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, ‘‘আবগারি দফতরের নির্দেশে এবং জেলার আবগারি সুপারের রিপোর্টে ওই কারখানায় যে মদ তৈরি হচ্ছিল, তাতে ক্ষতিকারক রাসায়নিক থাকার প্রমাণ মিলেছে। সেই কারণে আপাতত তদন্ত ও পরিদর্শনের জন্য কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্তে আইএফবি-র মুখপাত্র অলোক দে বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ হাতে না-পেয়ে মন্তব্য করব না।’’
গত ১২ জুন ওই কারখানায় তৈরি হওয়া দিশি মদের নমুনা পরীক্ষা করেই এই দুই পদার্থের হদিস মিলেছে বলে আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। রাজ্যের আবগারি আইন অনুযায়ী দিশি মদ তৈরির পর প্রতিটি ব্যাচের নমুনা সংগ্রহ করে রাসায়নিক বিশ্লেষণের রিপোর্ট আবগারি দফতরে জমা করতে হয়। উৎপাদনকারী সংস্থাকেই এই রিপোর্ট পেশ করতে হয়। আবগারি দফতর সেই রিপোর্ট থেকে দিশি মদের গুণগত মানের বিচার করে। সামান্য হেরফের হলে বাতিল হয় সংশ্লিষ্ট ব্যাচের মদ। মিথাইল অ্যালকোহলযুক্ত মদ বাজারে ছাড়ার যে রিপোর্ট এসেছে, সেটি ওই সংস্থাই তৈরি করেছে। যা আবগারি দফতরের পরির্দশনের সময় নজরে এসেছে। এমন মদ কত দিন ধরে সংস্থাটি বাজারে বিক্রি করছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান আবগারি দফতরের এক শীর্ষ কর্তা।
আবগারি দফতর সূত্রের খবর, আইএফবি-র সবক’টি বটলিং প্ল্যান্ট এবং ডিস্টিলারিতে গত কয়েক দিন ধরে টানা পরির্দশন করছে আবগারি দফতর। আইএফবি রাজ্যের দিশি মদের প্রায় ৩৫% উৎপাদন করে। ডায়মন্ড হারবার, ডানকুনি, পানাগড়, আসানসোল, কান্দি, পুরুলিয়া এবং উত্তরবঙ্গের কারখানা থেকে বছরে প্রায় ২৫ কোটি বোতল দিশি মদ তৈরি করে।