বৃহস্পতিবার থেকেই তৃতীয় শ্রেণির কর্মী-পদে নিয়োগের কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া শুরু হবে। প্রতীকী ছবি।
চাকরির প্রতীক্ষা-তালিকায় যে-সব প্রার্থীর নাম বহু দিন ধরে আটকে আছে, কলকাতা হাই কোর্ট নিয়োগ প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ না-করায় তাঁদের রাস্তা কিছুটা সুগম হতে চলেছে। বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার স্কুলে ‘গ্রুপ সি’ বা তৃতীয় শ্রেণির কর্মী-পদে নিয়োগের কাউন্সেলিংয়ের উপরে কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি। ফলে আজ, বৃহস্পতিবার থেকেই ওই কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া শুরু হবে। শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিতে ৮৪২ জনের চাকরি বাতিলের ফলে যে-সব পদ শূন্য হয়েছে, প্রতীক্ষা-তালিকা থেকে সেখানে নিয়োগ করতে চলেছে এসএসসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশন।
৮৪২ জন শিক্ষাকর্মীর চাকরি গিয়েছে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে। তাঁর সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুত কর্মীরা ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন। এ দিন চাকরিহারাদের আইনজীবীরা কোর্টে জানান, এসএসসি, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং ডিআই বা জেলা স্কুল পরিদর্শকের চিঠি নিয়েই তাঁদের মক্কেলরা কাজে যোগ দিয়েছিলেন। তাই এসএসসি, পর্ষদ, ডিআই-দের ভূমিকা নিয়েও তদন্ত হোক।
তার পরেই এক আইনজীবীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘গেম ইজ় অন। খেলা হবে।’’ সেই মন্তব্য কানে যেতেই ওই আইনজীবীকে ‘খেলা হবে’ শব্দবন্ধ প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেন বিচারপতি তালুকদার।
নিয়োগ পরীক্ষার ‘ওএমআর শিট’ বা উত্তরপত্রের আইনি গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন চাকরিহারাদের আইনজীবীরা। সিবিআইয়ের কৌঁসুলি এ দিন কোর্টে জানান, উত্তরপত্রের প্রতিলিপি কোনও সাধারণ প্রতিলিপি নয়। সেগুলি নির্দিষ্ট যন্ত্রে (ওএমআর স্ক্যান মেশিন) স্ক্যান করা হয়েছিল। ওএমআর শিট এবং সাধারণ কাগজের টুকরো এক জিনিস নয়। এই তথ্য সুরক্ষিত রাখতে উচ্চ প্রযুক্তি আছে। তাই উত্তরপত্রের বিকৃত প্রতিলিপি প্রকাশের তত্ত্ব ধোপে টেকে না। চাকরিহারাদের আইনজীবীরা এ দিন কোর্টে মন্তব্য করেন, নিয়োগ প্রক্রিয়া কার্যত জীবাশ্মে পরিণত হয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি তালুকদার বলেন, ‘‘জীবাশ্ম নয়, মিশরীয় জীবাশ্ম।’’ ‘মিশরীয় জীবাশ্ম’ শব্দবন্ধের পরিপ্রেক্ষিতে অনেকের ব্যাখ্যা, ইতিহাসের উপাদান হিসেবে মিশরের মমি ও জীবাশ্মের ভূমিকা সুবিদিত। তা থেকে বহু অজানা তথ্য উঠে আসে। এখানেও নিয়োগ প্রক্রিয়া ঘাঁটতে ঘাঁটতে দফায় দফায় বহু বিস্ময়কর তথ্য সামনে আসছে।