পড়ুয়া এবং শিক্ষকদের জন্য তো বটেই, গোটা পৃথিবীর জন্য খুলে দেওয়া হল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজিটাল সংগ্রহশালার দরজা।
পঠনপাঠন এবং গবেষণার কাজ মসৃণ রাখতে বড় পদক্ষেপ করল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। পড়ুয়া এবং শিক্ষকদের জন্য তো বটেই, গোটা পৃথিবীর জন্য খুলে দেওয়া হল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজিটাল সংগ্রহশালার দরজা। কোভিড-১৯ সংক্রমণের মোকাবিলায় যে ভাবে ঘরবন্দি থাকতে হচ্ছে প্রত্যেককে, তার জেরে যাতে পড়াশোনা বা গবেষণা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে কথা ভেবেই নানা গবেষণাপত্র, বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা প্রকাশনা, বিভিন্ন জার্নাল-সহ বহু বছরের সংগ্রহ গোটা বিশ্বের নাগালে এনে দিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
১৯৬০ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত যে সব থিসিস জমা পড়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে, ১৯৫১ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত যে সব পিআরএস ডিসার্টেশন জমা পড়েছে, ১৯৫৬ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত যে সব মেডিক্যাল ডিসার্টেশন জমা পড়েছে, ১৯০৭ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় যে সব বই প্রকাশ করেছে, সে সব-সহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকা, সমাবর্তন ভাষণ ও অন্যান্য নথির ডিজিটাইজড সংস্করণ সকলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।
‘ডব্লুডব্লুডব্লু ডট সিইউলাইব্রেরি ডট এসি ডট ইন’ (www.culibrary.ac.in)— এই ওয়েবসাইটে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজিটাল সংগ্রহশালার নাগাদ পাওয়া যাবে। লকডাউনের কারণে যে হেতু বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বা লাইব্রেরিতে এসে বইপত্র বা গবেষণাপত্রের নাগাল পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না, সে হেতু বাড়ি থেকেই সে সব পাওয়ার ব্যবস্থা করা হল।
আরও পড়ুন: কোন জেলায় করোনা আক্রান্ত কত, মৃত কত, তালিকা দিল রাজ্য সরকার
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় এক বিবৃতিতে লিখেছেন, ‘‘আমাদের এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে প্রধান কারণ দু’টি। প্রথমত, আমাদের ছাত্রছাত্রী এবং আমাদের শিক্ষকরা বিধিনিষেধের কারণে সশরীরে গ্রন্থাগারে পৌঁছতে না পারায় তাঁদের শিক্ষা ও গবেষণা যে ভাবে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে, তার নিরসনের জন্য এই ব্যবস্থা। দ্বিতীয় কারণ হল, একটা সর্বজনীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে নাগরিকদের প্রতি এবং বৃহত্তর পৃথিবীর প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা।’’
আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় সহায়তা চায় তৃণমূল, বিজেপি রাজ্যে
কোভিড-১৯ সংক্রমণের জেরে দেশে লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় নানা পদক্ষেপ করছে, যা এই পরিস্থিতিতে জরুরি। শুধু পড়ুয়া বা শিক্ষকদের প্রতি নয়, বৃহত্তর সামাজিক দায়বদ্ধতা পালনের চেষ্টাও করছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। অনলাইন পঠনপাঠনের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগকে কাজে লাগিয়ে পড়ুয়াদের জন্য কাউন্সেলিং-এর বন্দোবস্ত করার কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন উপাচার্য। দীর্ঘ লকডাউনে যদি কেউ মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত বোধ করেন বা মানসিক চাপ অনুভব করেন, তা হলে ওই কাউন্সেলিং-এর সুযোগ তিনি নিতে পারবেন বলে উপাচার্য জানিয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে মাস্ক এবং স্যানিটাইজার তৈরি করে রাজ্য সরকারকে সরবরাহও করা হয়েছিল। এ বার বিশ্ববিদ্যালয়ের বই ও গবেষণাপত্রের ডিজিটাল সংগ্রহও সবার জন্য খুলে দেওয়া হল।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)