Coronavirus

ভিন্‌ জেলা থেকে ফেরায় আপত্তি, অপমানে আত্মঘাতী কাটোয়ার দিনমজুর

মহকুমাশাসক (কাটোয়া) প্রশান্তরাজ শুক্ল শনিবার বলেন, ‘‘বাইরে থেকে ফেরা কারও শরীরে কোনও উপসর্গ মিললে ‘কোয়রান্টিন’ কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২০ ০৫:২৮
Share:

প্রতীকী ছবি

দিনমজুরের কাজ করতে গিয়ে আটকে পড়েছিলেন ভিন্ জেলায়। সেখান থেকে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার হেঁটে শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছলে পড়শিদের একাংশ তাঁর এলাকায় থাকা নিয়ে আপত্তি তোলেন, অভিযোগ পরিবারের। শুক্রবার সন্ধ্যায় পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার মুস্থুলি গ্রামের শ্বশুরবাড়িতেই ঝুলন্ত দেহ মেলে চঞ্চল মাঝি (৩৩) নামে ওই যুবকের। পরিজনের দাবি, পড়শিদের ‘বাধা’য় অপমানিত বোধ করেই আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি।

Advertisement

মহকুমাশাসক (কাটোয়া) প্রশান্তরাজ শুক্ল শনিবার বলেন, ‘‘বাইরে থেকে ফেরা কারও শরীরে কোনও উপসর্গ মিললে ‘কোয়রান্টিন’ কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে যাঁদের বাড়ি পাঠানো হচ্ছে, তাঁদের থাকতে দেওয়া নিয়ে সমস্যা তৈরি করা অনুচিত। এ নিয়ে মানুষকে সচেতন হতে হবে।’’ পূর্ব বর্ধমানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ধ্রুব দাস বলেন, ‘‘ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কেউ অযথা আতঙ্ক ছড়ালে, কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

পরিবার সূত্রে জানা যায়, আদতে মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের বরুটিয়ার বাসিন্দা হলেও, মুস্থুলির শ্বশুরবাড়িতেই বেশির ভাগ সময় থাকতেন চঞ্চল। লকডাউন শুরুর আগে হুগলির উত্তরপাড়ায় দিনমজুরির কাজে গিয়েছিলেন। তাঁর স্ত্রী পুষ্প মাঝি ও দুই শিশুসন্তান ছিলেন মুস্থুলিতেই। পরিবারের দাবি, দীর্ঘদিন উত্তরপাড়ায় আটকে থাকার পরে, হেঁটেই কাটোয়ায় ফেরার সিদ্ধান্ত নেন চঞ্চল। দিন পাঁচেক ধরে হেঁটে বৃহস্পতিবার তিনি মুস্থুলিতে পৌঁছন।

Advertisement

পুষ্পর অভিযোগ, ‘‘স্বামীর ফেরার খবর পেয়েই গ্রামের কয়েক জন বাড়ির সামনে এসে দাবি করেন, ওঁকে গ্রাম থেকে চলে যেতে হবে। অপমানে উনি রাতে গ্রামের বাইরে রাস্তার ধারে রাত কাটান। শুক্রবার সকালে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গেলে, ডাক্তারেরা পরীক্ষা করে জানান, উনি সুস্থ। তার পরে বাড়ি ফিরলে, বিকেলে আবার ওই লোকজনেরা এসে আপত্তি করেন।’’ এর পরেই ঘরে ঢুকে গলায় দড়ি দিয়ে চঞ্চল আত্মঘাতী হন বলে পুষ্পর দাবি।

স্থানীয় জগদানন্দপুর পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের গৌতম ঘোষালের বক্তব্য, ‘‘ঘটনার দিন সকালে চঞ্চল কাটোয়া ২ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরীক্ষা করান। তা সত্ত্বেও গ্রামের কিছু লোক তাঁকে এলাকা ছাড়ার জন্য চাপ দেন বলে শুনেছি। অহেতুক আতঙ্ক তৈরি করলে তা থেকে বড় বিপত্তি ঘটে যেতে পারে, তা বাসিন্দাদের বোঝা দরকার।’’ প্রশাসনকে এ নিয়ে প্রচারের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হবে, দাবি প্রধানের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement