গণেশ রাজোয়াড়।
লকডাউন বাড়তে পারে শুনে পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছিল। খাওয়াদাওয়া কোনও রকমে জুটছিল। কিন্তু হাতে টাকা নেই। এ ভাবে আর কত দিন চলতে পারে! যে ভাবেই হোক, বাড়ি ফিরব ভেবে হেঁটে রওনা দিই। পথে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ একটা ট্রাকে তুলে দিয়েছিল। ঘুমোচ্ছিলাম। হঠাৎ প্রচণ্ড একটা শব্দ। হাসপাতাল হয়ে এখন ক্যাম্পে আছি। জায়গাটা কোথায় জানি না। বাকিরা কে, কোথায়, কেমন আছে কিছুই জানি না।
বাড়ি পুরুলিয়ার বোঙাবাড়ি গ্রামে। আমি আর বন্ধু গণেশ রাজোয়াড় রাজস্থানের জয়পুরে পাথরের কারখানায় গিয়েছিলাম ছ’-সাত মাস আগে। বৃহস্পতিবার সেখান থেকে রওনা দিই। আশা ছিল, বিহার পৌঁছতে পারলে, একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে। কিন্তু কিছু দূর যেতেই রাজস্থান পুলিশ আটকায়। ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পুরুলিয়ার আরও কয়েক জনের সঙ্গে দেখা হয় সেখানে।
শুক্রবার সকালে উত্তরপ্রদেশ সীমানা পর্যন্ত বাসে পৌঁছে দেয় রাজস্থান পুলিশ। কিছু দূর হাঁটতেই আটকাল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। ওরা নিয়ে যায় আর এক জায়গায়। সেখানেই জানতে পারি, ‘ওয়াল পুট্টি’ বোঝাই একটা ট্রাক পটনা যাচ্ছে। আমরা বলায় পুলিশ তাতে তুলে দেয়।
আরও পড়ুন: রাজস্থান থেকে পুরুলিয়ায় বাড়ি ফেরার পথে ৪ শ্রমিকের মৃত্যু দুর্ঘটনায়
আরও পড়ুন: লকডাউনের চতুর্থ দফায় বিমান চালুর চিন্তা, নজরে গণপরিবহণ
বুকে খুব লেগেছে। কিন্তু তার চেয়েও বড় চিন্তা, গণেশের কী হল। (গণেশ যে আর নেই জানেন না শিবু)
(অনুলিখন: প্রশান্ত পাল)