ফাইল চিত্র
দিল্লির নিজামুদ্দিনের ধর্মীয় সভা ফেরত হলদিয়ার এক ব্যক্তির শরীরে ইতিমধ্যেই করোনাভাইরাস মিলেছে। এর পরেও সচেতনতার লেশমাত্র নেই তমলুকের বাড়খোদা গ্রামের বাসিন্দাদের।
বাড়খোদা গ্রামের এক যুবক সম্প্রতি নিজামুদ্দিনের সভা থেকে ফিরেছেন। তাঁকে হাসপাতালে আনতে গিয়ে গ্রামবাসীদের হাতে হেনস্থার শিকার হলেন মহিলা স্বাস্থ্য কর্মীরা। মার খেলেন গাড়ির চালক। ভাঙচুর করা হল গাড়ি। তমলুক থানার পুলিশ বাহিনী গিয়ে স্বাস্থ্য কর্মীদের উদ্ধার করে এবং আহত গাড়ি চালককে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। শনিবার দুপুরের এই ঘটনায় রীতিমতো চিন্তায় প্রশাসন।
পুলিশ এবং প্রশাসন সূত্রের খবর, তমলুক থানার বাড়খোদা গ্রামের ২৫ বছরের ওই যুবক নিজামুদ্দিনের ধর্মীয় সভায় গিয়েছিলেন। গত ১৮ মার্চ যুবক তমলুকের বাড়িতে ফিরে আসেন। দিল্লির ওই ধর্মীয় জমায়েতে যোগ দেওয়া বহু ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। বিষয়টি সামনে আসার পরেই কেন্দ্রীয় সরকার সেখানে হাজির দের নামের তালিকা করে। সেই তালিকা পাঠানো হয় রাজ্য এবং জেলা প্রশাসনের কাছে।
কয়েকদিন আগেই জেলা পুলিশ এবং স্বাস্থ্য দফতর ওই তালিকায় থাকা হলদিয়ার এক বাসিন্দাকে চিহ্নিত করে। তিনি এখন করোনায় আক্রান্ত অবস্থায় চিকিৎসাধীন। এর পরে শুক্রবার চিহ্নিত করা হয় বাড়খোদার যুববকে। তাঁকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসতে শনিবার তমলুক ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চার কর্মীর একটি দল বাড়খোদা যাচ্ছিল।
দুপুর ২টা নাগাদ গ্রামের কাছে স্বাস্থ্য কর্মীদের গাড়ি আটকান স্থানীয়েরা। যুববকে নিয়ে যেতে দেওয়া হবে না, এই দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। অভিযোগ, সে সময় স্বাস্থ্য কর্মীরা গ্রামবাসীদের বোঝাতে গেলে তাঁরা মহিলা স্বাস্থ্য কর্মীদের হেনস্থা করেন। এর পরে স্বাস্থ্যকর্মীরা গাড়ি নিয়ে ফিরে আসার চেষ্টা করলে চালককে নামিয়ে মারধর এবং গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনায় গুরুতর আহত হন শিবু বাগ নামে ওই গাড়ির চালক।
খবর পেয়ে তমলুক থানার পুলিশবাহিনী গিয়ে চার স্বাস্থ্য কর্মী এবং চালককে উদ্ধার করে। নিজামুদ্দিন ফেরত ওই যুবকের নাগাল পায়নি পুলিশও। ওই যুবক ধরতে তদন্ত শুরু করেছে জেলা পুলিশ। স্বাস্থ্যকর্মীদের হেনস্থা, গাড়ি ভাঙচুর চালককে মারধরের ঘটনায় জড়িত লোকজনদের বিরুদ্ধে তমলুক থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে লড়ার জন্য আমজনতাকে যাঁদের উপরে ভরসা করতে হচ্ছে, সেই স্বাস্থ্য কর্মীদের উপরে এমন হামলায় স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে। জেলা পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য কর্মীদের কাজে স্থানীয় একদল লোক বাধা দেওয়ার এবং হেনস্থার অভিযোগ এসেছে। এই ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’’
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।