প্রতীকী ছবি
মাছের চারা পরিবহণ থেকে শুরু করে মাছ উৎপাদন, মাছ সংক্রান্ত সবই লকডাউনের আওতার বাইরে। এ বিষয়ে কেন্দ্র সমস্ত রাজ্যকে সম্প্রতি নির্দেশিকা দিয়েছে। কিন্তু তারপরেও মাছের চারা গাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশি হেনস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা। এ নিয়ে তাঁরা রাজ্যের মুখ্যসচিব ও মৎসমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন।
গত ১৫ এপ্রিল মাছের চারা নিয়ে গাড়িতে করে বসিরহাট থেকে দিঘা আসছিলেন পেশায় মাছ ব্যবসায়ী, পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরের বাসিন্দা তপনকুমার বারিক ও দেবব্রত কামিলা। অভিযোগ, বসিরহাট ব্রিজ থেকে গাড়িটি নামতেই সেখানকার কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশ গাড়িটিকে আটকে রাখে। মাছ ব্যবসায়ী তপনকুমার বারিক বসিরহাটের পুলিশ সুপার কঙ্করপ্রসাদ বারুইকে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, গাড়ির সমস্ত কাগজপত্র ঠিক থাকা সত্ত্বেও ব্লু বুক ও লাইসেন্স কেড়ে নেওয়া হয়। আট হাজার টাকা দেওয়ার দাবি করা হয়। ওই টাকা না থাকায় তাঁদের মারধর করে দেড় হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। তপনবাবু জানিয়েছেন, ‘‘সে দিন সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা থেকে সাড়ে ন’টা পর্যন্ত টানা তিন ঘণ্টা ট্র্যাফিক ফাঁড়ির একটি ঘরে আটক করে রাখা হয়। দেরিতে দিঘা পৌঁছনোর জন্য অর্ধেক মাছের চারা নষ্ট হয়ে গিয়েছে।’’ এই ঘটনা প্রসঙ্গে বসিরহাটের পুলিশ সুপার কঙ্করপ্রসাদবাবু বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। ডিএসপি (ট্র্যাফিক)-কে দিয়ে পুরো ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে দোষী পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
পূর্ব মেদিনীপুরে নন্দকুমার থেকে দিঘা যাওয়ার পথে বিভিন্ন চেক পয়েন্টে সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত মাছের গাড়ি দেখলেই পুলিশ হেনস্থা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যের মুখ্যসচিব ও পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে ইমেল করে লিখিত অভিযোগে বেলঘরিয়ার হ্যাচারি মালিক শুভেন্দু ভৌমিক জানিয়েছেন, দিন সাতেক আগে মাছের চারা নিয়ে যাওয়ার সময় পূর্ব মেদিনীপুরের বাজকুল, নন্দকুমার, কাঁথি প্রভৃতি জায়গায় পুলিশকে টাকা দিতে বাধ্য হন তাঁর কর্মীরা। এই অভিযোগ প্রসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়, ‘‘অভিযোগ যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হবে।’’ রাজ্যের মাছ আমদানি সংস্থাকারী সংগঠনের সভাপতি অতুলচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘বেশ কিছু জায়গায় পুলিশের হাতে মাছ ও মাছের চারা বহন করতে গিয়ে চূড়ান্ত হেনস্থার শিকার হচ্ছেন চাষিরা।’’ রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, ‘‘মাছচাষিদের হেনস্থা ঠেকাতে মৎস্য কমিশনার মারফত রাজ্যের সমস্ত থানায় সরকারি নির্দেশিকা পাঠানো হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন: গৃহসহায়িকাদের আর্জি