ফাইল চিত্র।
করোনার পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চশিক্ষায় পরীক্ষা ও ক্লাসে তোলার ক্ষেত্রে কার নির্দেশ মানা হবে? মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের, নাকি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি)?
লকডাউনের মধ্যে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় স্তরেও পরীক্ষা ছাড়াই ক্লাসে তোলা এবং কোন কোন ক্ষেত্রে পরীক্ষা হবে, বুধবার তা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, পড়ুয়ারা এক সিমেস্টার এগিয়ে যাবেন এবং পরীক্ষা হবে চূড়ান্ত সিমেস্টারে।
অন্য দিকে, ইউজিসি আগেই জানিয়েছে, করোনা-আবহে তাদের সাত সদস্যের কমিটিই বলবে, পঠনপাঠন কী ভাবে চলবে এবং পরীক্ষা হবে কী ভাবে। বুধবারেই অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন বা এআইসিটিই তাদের অনুমোদিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে জানিয়েছে, ইউজিসি-র ওই কমিটির নির্দেশ অনুসারেই পরীক্ষা নেওয়া ও পাশের ভিত্তি ঠিক করা হবে।
আরও পড়ুন: রেশন নিয়ে অসন্তোষ, বদল হলেন খাদ্যসচিব
ধন্দ-ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে এই দুই নির্দেশ নিয়েই। কারণ, ইউজিসি হল উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে সাধারণ শিক্ষার (ডিগ্রি কোর্স) নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং প্রযুক্তি শিক্ষার নিয়ন্ত্রক এআইসিটিই। অথচ মুখ্যমন্ত্রী ক্লাসে তোলা, পরীক্ষা নেওয়া বা না-নেওয়ার বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রশ্ন উঠছে, ইউজিসি-র কমিটির রিপোর্টে পরীক্ষা ও পাশের বিষয়ে যে-ব্যবস্থার কথা বলা হবে, তার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের যদি মিল না-থাকে, তা হলে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি কী করবে?
এই পরিস্থিতিতে ‘অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার’ বা শিক্ষা-নির্ঘণ্ট কী হবে, তা-ও জানানোর কথা ইউজিসি-র ওই কমিটির। তাদেরই পরামর্শ মেনে চলার কথা বুধবারের নির্দেশিকায় স্পষ্ট করে দিয়েছেন এআইসিটিই-র সদস্য-সচিব রাজীব কুমার।
আরও পড়ুন: সরকারি কাজে জ়ুম নয়, বার্তা কেন্দ্রের
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী স্নাতক স্তরে চূড়ান্ত বর্ষ অর্থাৎ পার্ট থ্রি পরীক্ষা হবে। সিমেস্টার সিস্টেমে স্নাতক স্তরে ষষ্ঠ বা চূড়ান্ত সিমেস্টারের পরীক্ষাও দিতে হবে। কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকে পার্ট থ্রি পাঠ্যক্রম চালু আছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পার্ট থ্রি পরীক্ষা রয়েছে বিএ এবং বিএসসি-তে। বি-কমে ষষ্ঠ সিমেস্টারই চূড়ান্ত। তবে আগের কিছু অকৃতকার্য পড়ুয়ার বি-কমেও পার্ট থ্রি পরীক্ষা দেওয়ার কথা। চূড়ান্ত সিমেস্টারের পরীক্ষা হবে ইঞ্জিনিয়ারিং, স্নাতকোত্তর স্তরেও। প্রশ্ন উঠছে, স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে অন্য সিমেস্টারের যে-সব পড়ুয়া এক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছেন, তাঁরা কি ভবিষ্যতে দু’টি সিমেস্টারের পরীক্ষা একসঙ্গে দেবেন? কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কথা বলে দেখা গেল, এই নিয়ে স্পষ্ট ধারণা নেই কারও। সকলেই রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের লিখিত নির্দেশিকার অপেক্ষায় আছে।
ইউজিসি-র কমিটির রিপোর্টের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ না-মিললে কী হবে, প্রশ্ন উঠছে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। কিছু শিক্ষা প্রশাসকের আশা, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার সঙ্গে হয়তো ইউজিসি-র সুপারিশের খুব বেশি ফারাক থাকবে না। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘ইউজিসি-র কমিটির সুপারিশ এলে দেখা যাবে।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)