প্রতীকী ছবি।
লকডাউনে সকলে ঘরবন্দি। বন্ধ স্কুল কলেজ, অফিস-কাছারি, কল-কারখানা। তবে ডিজিটাল যুগে পড়াশোনা, অফিসের কাজ চলছে ঘরে বসেই। আর তাতে সহায় বিভিন্ন ধরনের ভিডিয়ো কমিউনিকেশন অ্যাপ। কিন্তু এমনই একটি বিপুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠা অ্যাপ ‘জ়ুম’ নিয়ে সতর্ক করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। মন্ত্রকের অধীনস্থ সাইবার কোঅর্ডিনেশন সেন্টার (সাইকর্ড) জানিয়েছে, কোনও সরকারি কাজে এই অ্যাপ ব্যবহার করা যাবে না। বেসরকারি বা ব্যক্তিগত কাজে জ়ুম অ্যাপ ব্যবহার করলে যথেষ্ট সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
যে হেতু খুব সহজে এক সঙ্গে অনেককে নিয়ে ভিডিয়ো কনফারেন্স করা যায়, তাই লকডাউনের আবহে গোটা বিশ্ব জুড়েই জনপ্রিয় হয়েছে জ়ুম। কিন্তু গোড়া থেকেই বিতর্ক তাড়া করছে এই অ্যাপকে। অভিযোগ, এই অ্যাপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুব পোক্ত নয়। প্রায়শই তাতে ঢুকে পড়ে তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে হ্যাকারেরা। সিঙ্গাপুরের একটি স্কুলের এমনই ভিডিয়ো কনফারেন্সের সময় আচমকাই ভেসে ওঠে অশ্লীল ছবি। তার পরেই সে দেশে নিষিদ্ধ হয়েছে জ়ুম-এর ব্যবহার।
সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত ভারতের সর্বোচ্চ সংস্থা ইন্ডিয়ান কম্পিউটার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম বা ‘সার্ট-ইন’ এর আগে রাজ্যগুলিকে সতর্ক করে বলেছিল, জ়ুম অ্যাপের মাধ্যমে ভিডিয়ো কনফারেন্স না-করাই ভাল। কারণ, গুপ্তচরবৃত্তির জন্য এই অ্যাপটি ব্যবহারের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। কারণ জ়ুম অ্যাপের ‘অথেন্টিকেশন’ ব্যবস্থা খুবই দুর্বল। ফলে রিমোট অ্যাটাকার-রা আগে থেকেই মিটিং আইডি এবং তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ইউআরএল লিঙ্ক তৈরি করে রাখতে পারে। সেই মিটিং আইডি মারফত ভিডিয়ো বৈঠক হলে তার আলোচনা, প্রেজেন্টেশন, ছবি সবই চলে যেতে পারে হ্যাকারদের হাতে।
আরও পড়ুন: ফের ১০০ দিনের কাজে নামতে নতুন রূপরেখা
সাইবার নিরাপত্তা ও এথিক্যাল হ্যাকিং বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্ত অবশ্য বলছেন, ‘‘শুধু জ়ুম অ্যাপ নয়, যে কোনও ধরনের ভিডিয়ো বৈঠকের সময়ই নিরাপত্তামূলক কিছু পদক্ষেপ করতে হয়। সেটা স্কাইপ বা গুগল ক্লাসরুমের মতো অ্যাপগুলির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। নিরাপত্তা বিধি যথাযথ না-হলে ভিডিয়ো বৈঠক বিপজ্জনক হতে পারে।’’ তাঁর মতে, জ়ুমের মালিক চিনা হওয়ার ফলে আলাদা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। কিন্তু জ়ুম ব্যবহারকারীদের যে তথ্য ‘ডার্ক ওয়েবে’ বা সাইবার জগতের অন্ধকার দুনিয়ায় বিক্রি হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে, তা সংস্থার সার্ভার থেকে চুরি হয়েছে, নাকি ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে, তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে জ়ুমের ক্ষেত্রে কিছু সুরক্ষাকবচ ‘অফ’ করা ছিল। ব্যবহারকারীদের সেগুলি ‘অন’ করতে হত। তা না-করার ফলেই এই বিপদ হয়েছে। প্রসঙ্গত, জ়ুম অ্যাপের অন্যতম মালিক এরিক ইউয়ান চিনে গণিত ও কম্পিউটারের পড়াশোনা শেষ করে ৯০-এর দশকে আমেরিকা যান। বর্তমানে তিনি সে দেশের নাগরিক।
আরও পড়ুন: ভয় কিসের? বেলগাছিয়া বস্তিতে করোনা-যুদ্ধে বলছেন ওঁরা
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)