Coronavirus

রেশন-দুর্নীতিতে বিক্ষোভ, ডিলার সাসপেন্ড করে তদন্ত

রেশনের দ্রব্য কম দেওয়ার অভিযোগ তুলে মুর্শিদাবাদের ভরতপুর-২ ব্লকের পুনাশি গ্রামের বাসিন্দারা এক রেশন ডিলারের বাড়িতে চড়াও হন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২০ ০৫:৪১
Share:

প্রতীকী ছবি।

লকডাউন পর্বে গরিব মানুষের ভরসা রেশনের চাল। কিন্তু সেই রেশন বিলি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভ প্রকাশ করছিলেন গ্রাহকেরা। শনিবার রেশন-দুর্নীতির অভিযোগে মুর্শিদাবাদে আক্ষরিক অর্থেই আগুন জ্বলেছে। বিক্ষোভ হয়েছে অন্যান্য জেলাতেও। অতিমারি এবং তার জেরে এই কঠিন পরিস্থিতিতে রেশন ডিলারদের একাংশের বিরুদ্ধে এই ক্ষোভ রেশন বণ্টন ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। তবে দুর্নীতির অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিয়েছে প্রশাসন।

Advertisement

রেশনের দ্রব্য কম দেওয়ার অভিযোগ তুলে মুর্শিদাবাদের ভরতপুর-২ ব্লকের পুনাশি গ্রামের বাসিন্দারা এক রেশন ডিলারের বাড়িতে চড়াও হন। বাড়ির সামনে আগুনও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওই ডিলারের পরিবারের লোকেরাই বাড়ির জিনিসপত্র ও রেশনের নথি বাইরে এনে নিজেরাই আগুন জ্বালিয়ে দেন। শনিবার অভিযুক্ত রেশন ডিলার হালিম শেখকে সাসপেন্ড করে তদন্ত শুরু করেছে খাদ্য দফতর। হালিমকে আটক করে সালার থানা। এই জেলারই লালগোলার বয়রাতে বাবলু শেখ নামে এক ডিলারের বাড়িতেও আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যদিও বাসিন্দাদের দাবি, বাবলু নিজেই আগুন লাগিয়েছেন।

রেশন ডিলার সংগঠনের মুর্শিদাবাদের জেলা সম্পাদক কৃষ্ণচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘সব ডিলারকে স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। কেউ দুর্নীতি করলে সংগঠন পাশে থাকবে না।’’ জেলা খাদ্য নিয়ামক সাধন পাঠক বলেন, “রেশনের দ্রব্য সামগ্রী কম দেওয়ার পিছনে উপযুক্ত কারণ জানাতে না পারলে ওই ডিলারের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।”

Advertisement

ডিজিটাল কার্ড থাকা সত্ত্বেও রেশন না পাওয়ার অভিযোগ উঠল বর্ধমানে। শনিবার সকালে জেলা খাদ্য দফতরের সামনে জড়ো হয়ে কিছু গ্রাহক এ নিয়ে অভিযোগ জানান। জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী বলেন, ‘‘বৈধ কার্ড থাকলেও খাদ্যসামগ্রী না-দিলে ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ পূর্ব বর্ধমানের নানা প্রান্তে ওজনে কারচুপি, আটা না-দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। দু’দিনে পাঁচ জন ডিলারকে শো-কজ় করেছে প্রশাসন।

খাদ্য দফতরের বক্তব্য, প্রতিটি রেশন দোকানে কে কত করে খাদ্যশস্য পাবেন, তা জানিয়ে বোর্ড লেখা রয়েছে। তার পরেও অনেকে এপিএল কার্ড নিয়ে রেশন তুলতে যাচ্ছেন। সেটা বৈধ নয়। অনেকে একাধিকবার খাদ্যশস্য নিতে যাচ্ছেন। সেটাও নজরে রেখেছে প্রশাসন। রেশনে দেওয়া নির্ধারিত ওজনের কম চাল এবং নিম্নমানেরও আটা দেওয়ার অভিযোগে শনিবার সকালে রেশন দোকান ঘিরে বিক্ষোভ দেখান কুলপির বনমসিদ গ্রামের এক দল বাসিন্দা। সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ঘণ্টা তিনেক বিক্ষোভ চলে। প্রশাসনের আশ্বাসে বিক্ষোভ ওঠে। কুলপির বিডিও সঞ্জীব সেন জানিয়েছেন কৃষ্ণেন্দু মন্ডল নামে বনমসিদের ওই ডিলারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

রেশন দোকানে দূরত্ব-বিধি না-মানার অভিযোগ উঠছে উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গায়। দোকানের সামনে লাঠিধারী পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শাসন থানার মজলিসপুরে চাল কম দেওয়ার অভিযোগে ডিলারকে মারধর করা হয়। বারাসত, দত্তপুকুর, বামনগাছি, আমডাঙা-সহ বিভিন্ন এলাকার রেশন দোকানে হানা দেন দূর্নীতি দমন শাখার অফিসারেরা। বারাসতের এসপি অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দুর্নীতি হলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

মেদিনীপুর গ্রামীণের একটি অঞ্চলে দুজন রেশন ডিলার সাসপেন্ড হওয়ায় স্থানীয়দের কিছুটা দূরে গিয়ে রেশন সংগ্রহ করতে হচ্ছে। স্থানীয়রা যাতে এলাকাতেই রেশন পেতে পারেন তার ব্যবস্থা হচ্ছে বলে প্রশাসনের খবর। পুরুলিয়ার পুঞ্চা ব্লকের কৈরা গ্রামে শুক্রবার কম কেরোসিন দেওয়া নিয়েও গ্রাহকেরা বিক্ষোভ দেখান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement