চলছে মাস্ক তৈরির কাজ। নিজস্ব চিত্র
বাড়ি থেকে বেরোলেই নাগরিকদের মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার। ক্রমেই বাড়তে থাকা করোনা আক্রান্তের পরিসংখ্যান দেখে এ রাজ্যেও বাড়ছে মাস্কের চাহিদা। অথচ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না সেই রক্ষাকবচ! এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের কাছে কাপড়ের তৈরি মাস্ক পৌঁছে দিতে এগিয়ে এসেছে রাজ্যের স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি দফতর।
দফতরের সচিব দিব্যেন্দু সরকার বলেন, “রাজ্যের ন’টি জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে মাস্ক তৈরির কাজ শুরু হয়েছে মাস দেড়েক আগেই। ইতিমধ্যে প্রায় পাঁচ লক্ষ মাস্ক বিভিন্ন জেলার জেলাশাসক ছাড়াও জনপ্রতিনিধির কাছে সরবরাহ করা হয়েছে। সমাজের দুঃস্থ, প্রান্তিক মানুষদের হাতে তা তুলে দেওয়া হয়েছে।” দফতর সূত্রের খবর, কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ, পুরুলিয়া, দার্জিলিং ও মালদহে মাস্ক তৈরির প্রশিক্ষণের কাজ চলছে। কী ভাবে মাস্ক তৈরি করা হবে, তার একটি ভিডিয়ো তৈরি করে তা ন’টি জেলার ভারপ্রাপ্ত টেলরিং সংস্থাগুলির কাছে পাঠানো হয়েছিল আগেই। দফতরের অধীনস্থ স্বরোজগার নিগমের আধিকারিক সব্যসাচী সানা বলেন, “মাস্ক তৈরির সময়ে মহিলারা যাতে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখেন, সে বিষয়টির প্রতি যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্প গ্রহণ করায় লকডাউনের মধ্যে প্রায় তিন হাজার মহিলা কাজের সুযোগ পেয়েছেন।”
বছরভর স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে দফতর। তবে কাপড় দিয়ে মাস্ক তৈরি এই প্রথম হচ্ছে বলে জানাচ্ছে তারা। দিব্যেন্দুবাবু জানাচ্ছেন, প্রশিক্ষণ সংস্থাগুলিকে মাস্কপিছু টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে। তৈরি মাস্ক আপৎকালীন হিসেবে প্রতি জেলায় বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের নিমপীঠে প্রশিক্ষণরত বর্ণালী রায় বলেন, “এখন স্বামীর দোকান বন্ধ। প্রতিদিন মাস্ক তৈরি করে পাঁচশো টাকা রোজগার করছি। এমন পরিস্থিতিতে ওই টাকা আমার খুব কাজে লাগছে।’’ সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে বলেন, “জরুরি পরিস্থিতিতে দুঃস্থ মানুষের সুরক্ষার কথা ভেবেই হাতে মাস্ক তুলে দিতে এই প্রচেষ্টা। নবান্নেও কর্মী, আধিকারিকদের জন্য এই মাস্ক পাঠানো হয়েছে।”
আরও পড়ুন: রাজ্যে কোভিডে মৃত্যু ৫০ ছুঁল, এই মুহূর্তে চিকিৎসাধীন ৬৬৩