মন্ডপের বাইরে দর্শকদের আনাগোনা। ছবি: এএফপি।
অতিমারি পরিস্থিতির জন্য শহরতলির ট্রেন চলাচল বন্ধ। তার উপরে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশিকা। তাই পঞ্চমীর রাতে ফাঁকাই গেল রাস্তাঘাট। ‘নো এন্ট্রি জ়োন’-এর ব্যারিকেডের বাইরে থেকে উঁকি মেরে কেউ কেউ মণ্ডপ দেখতে চেয়েছেন। কিন্তু তাতে সাধ মেটেনি।
পুলিশ সূত্রের খবর, হাইকোর্টের নির্দেশিকা পালনের জন্য সব থানায় নির্দেশ পাঠিয়েছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা। ভিড় না-থাকায় জিরিয়ে নেওয়ার ফুরসত পেয়েছেন পুলিশকর্মীরা। এক প্রবীণ পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘ত্রিশ বছরের চাকরিতে জীবনে এমন পঞ্চমীর সন্ধ্যা দেখিনি।’’ কলকাতার পুজো উদ্যোক্তাদের সংগঠন ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’-এর সাধারণ সম্পাদক শাশ্বত বসু বলেন, ‘‘আক্ষেপের বিষয়, দর্শকেরা মণ্ডপে ঢুকতে পারবেন না। ব্যারিকেডের বাইরেও দূরত্ববিধি, মাস্ক, স্যানিটাইজ়ারের ব্যবস্থা রাখছি।’’
জেলাগুলিতেও মণ্ডপের সামনে ব্যারিকেড। তবে রাস্তায় ভিড় হলে কী হবে, তা চিন্তায় রেখেছে প্রশাসনকে। নদিয়া জেলা পুলিশ রাস্তার ধারে অস্থায়ী দোকান বা স্টল বসতে দেবে না। জেলার অন্যতম বড় পুজো বাদকুল্লা অনামি ক্লাব পুজো কমিটির যুগ্ম সম্পাদক হিমাদ্রি পাল বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষকে পুজো, মণ্ডপ, প্রতিমা দেখানো হবে।’’
আরও পড়ুন: সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ ও পুজোর ‘সন্ধিক্ষণে’ রাজ্য
আরও পড়ুন: রাজ্যে ফের দৈনিক সংক্রমণ ৪ হাজার পেরোল, মৃত ৬৪
হাইকোর্টের রায় অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলতে পুরুলিয়ার সব পুজোকে সতর্ক করেছে পুলিশ। মুর্শিদাবাদের পুলিশের চিন্তা রাস্তায় ভিড় সামলানো নিয়ে। আসানসোলের পুজোগুলিতে ব্যারিকেডের বাইরে জায়ান্ট স্ক্রিনের সামনে অঞ্জলি দেওয়া যাবে। তবে দশ জনের বেশি জমায়েত নয়। পূর্ব বর্ধমানের অনেক পুজো উদ্যোক্তার দাবি, ৪৫ জনের দলে ভাগ হয়ে অঞ্জলি দিতে সমস্যা হবে না।
ক্যানিংয়ের দু’টি পুজোয় উদ্বোধনে মাত্রাছাড়া ভিড় হয়। তাতে তৃণমূল নেতা, পুলিশকর্তারা ছিলেন বলে সূত্রের দাবি। বোলপুরের ভুবনডাঙা আদি সর্বজনীনের বক্তব্য, ‘‘যতটা পারব নির্দেশ মানার চেষ্টা করব।’’
জেলায় পর্যাপ্ত পুলিশি নজরদারি হবে কি? জলপাইগুড়ির এক পুলিশ বলেন, ‘‘অষ্টমীর দিন অঞ্জলিতে একই সময়ে সব মণ্ডপে নজরদারির আমাদের পরিকাঠামো নেই।’’ উত্তরের বেশির ভাগ পুজো সামাজিক দূরত্ব মেনে অঞ্জলির ব্যবস্থা করছে।
মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘আদালতের রায় মাথা পেতে গ্রহণ করেছি। কিন্তু যাঁরা আদালতে গেলেন, তাঁরা বুকে হাত দিয়ে বলুন তো, পুজো বন্ধ করার গভীর চক্রান্ত ছিল না!’’
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)