প্রতীকী ছবি।
জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে কলকাতায় ট্রায়ালের জন্য আরও করোনা প্রতিষেধক আসতে শুরু করবে। কলকাতা বিমানবন্দরের পণ্য বিভাগকে ইতিমধ্যেই এ নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। ঠিক হয়েছে, প্রধানত আমেরিকা, রাশিয়া এবং ভারতের পুণে থেকে পণ্য বিমানে এই টিকা কলকাতায় পৌঁছবে। এক-এক দিন দু’-তিনটি পণ্য বিমানে মোট ২০০ থেকে ৩০০ টন টিকা আসার কথা। কিন্তু সেই টিকা বিমান থেকে নামিয়ে বিমানবন্দরের বাইরে পর্যন্ত পৌঁছনো নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
বিমান থেকে পণ্য নামিয়ে তা বাইরে বার করার এই কাজ করেন ‘গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং’ কর্মীরা। এখন যে ১৮০ জন কর্মী পণ্য বিভাগে এই কাজ করছেন, তাঁরা সকলেই বেসরকারি সংস্থা ভদ্র-র কর্মী। কেন্দ্রের সঙ্গে এই সংস্থার চুক্তি ৩১ ডিসেম্বর শেষ হয়ে যাচ্ছে। প্রথমে ঠিক ছিল, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সহযোগী সংস্থা ‘এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া কার্গো লজিস্টিক অ্যান্ড অ্যালায়েড সার্ভিসেস কোম্পানি লিমিটেড’-কে দিয়ে এই কাজ করানো হবে। তারা এ নিয়ে টেন্ডারও বার করে। কিন্তু, কর্তৃপক্ষের কর্তাদের ‘অন্ধকারে রেখে’ শেষ মুহূর্তে এয়ার ইন্ডিয়াকে দিয়ে এই কাজ করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। আর এয়ার ইন্ডিয়ার যে সহযোগী সংস্থা এই কাজ করে, সেই ‘এআই এয়ারপোর্ট সার্ভিসেস লিমিটেড’ পণ্য বিভাগে এত দিন ধরে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ে যুক্ত কর্মীদের সবাইকে নিতে রাজি হচ্ছে না।
আর তাতেই দেখা দিয়েছে সমস্যা। পণ্য বিভাগের কর্তাদের দাবি, এখন প্রতি দিন কলকাতা বিমানবন্দরে যে পরিমাণ পণ্য আমদানি-রফতানি হয়, তা সামলানোর মতো পর্যাপ্ত কর্মী নেই এয়ার ইন্ডিয়ার এই সংস্থার হাতে। তার উপরে জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় থেকে প্রতি দিন অতিরিক্ত ২০০-৩০০ টন টিকা পণ্য হিসেবে আসতে শুরু করলে হিমসিম খেতে হবে। এখন যদি ভদ্র-র হয়ে এত দিন কাজ করা কর্মীদেরও না নেওয়া হয়, তা হলে টিকা সময়মতো বিমানবন্দরের বাইরে বার করা নিয়ে সমস্যা হতে পারে।
সমস্যা দেখা দিতে পারে যাত্রী উড়ান পরিষেবা নিয়েও। কারণ, ভদ্র-র প্রায় ২০০ কর্মী কলকাতা বিমানবন্দরে নিয়মিত এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়া, বিস্তারার যাত্রী উড়ানে কাজ করেন। বিমানবন্দরে নামার পরে বিমানে সিঁড়ি লাগানো, যাত্রীদের মালপত্র তোলা, বিমান পরিষ্কার করা সহ বেশ কিছু কাজের দায়িত্ব থাকে এই কর্মীদের। এঁরা কেউ ১০ বছর, কেউ ১৫ বছর এই কাজ করছেন। এই কর্মীদের ইউনিয়নের নেতা, স্থানীয় তৃণমূল নেতা বরুণ নট্টের অভিযোগ, করোনা কালে এমনিতেই এঁদের রোজগার তলানিতে ঠেকেছিল। মাত্র দু’মাস হল আবার বেতন পেতে শুরু করেছেন। বরুণবাবু বলেন, ‘‘এখন এঁদের সবাইকে না নেওয়া হলে, পরিষেবা ব্যাহত হবে।’’ ভদ্র-র এই ৩৮০ জন কর্মীকে এয়ার ইন্ডিয়া না নিলে আন্দোলনেরও হুমকি দিয়েছেন বরুণবাবুরা। ইতিমধ্যেই বিমানবন্দরে এয়ার ইন্ডিয়ার দফতরের সামনে তাঁরা অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছেন। এ বিষয়ে এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও রাত পর্যন্ত সাড়া মেলেনি।