প্রতীকী ছবি।
বঙ্গে করোনা পরীক্ষার গতিপ্রকৃতি নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য চাপান-উতোরের মধ্যেই কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার বা শিক্ষা-নির্ঘণ্ট এবং পরীক্ষাসূচি কে ঠিক করবে, সেই বিষয়ে বিতর্ক আরও তীব্র হল। এই ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি-র চিঠি আসার পরে পাল্টা চিঠি দিল রাজ্য সরকার।
ইউজিসি শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গ-সহ সব রাজ্য সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের জানায়, এই করোনা-আবহে বিশেষজ্ঞ কমিটির মতামত নিয়ে একটি ‘গাইডলাইন’ বা নির্দেশিকা পাঠানো হচ্ছে। সেই নির্দেশিকা মেনেই সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়কে অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার এবং পরীক্ষাসূচির বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করতে হবে।
এর পাল্টা হিসেবে ইউজিসি-র সচিব রজনীশ জৈনকে একটি চিঠি দিয়েছেন রাজ্যের উচ্চশিক্ষা সচিব মণীশ জৈন। সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, শিক্ষা যৌথ তালিকাভুক্ত। তাই ইউজিসি-র বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট সব রাজ্য সরকারের কাছেই পাঠানো হোক, যাতে তারা ওই রিপোর্টের উপরে মতামত দিতে পারে। সেই মতামত যাচাইয়ের আগে ইউজিসি যেন চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত না-নেয়। চিঠিতে এটাও জানানো হয়েছে যে, ওই বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট নিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য রাজ্য সরকারগুলিকে যেন যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে জৈনের চিঠিতে ইউজিসি-কে এটাও মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই ইউজিসি যদি এই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়, সেটাও হবে ‘ফেডারেল স্টাকচার’ বা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর আদর্শের পরিপন্থী।
আরও পড়ুন: আজ থেকে কিছু ছাড়, তবে হটস্পটে কড়া নিয়মে সিল বহু পাড়া
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার ঘোষণা করেছিলেন, করোনা-আবহে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে চূড়ান্ত সিমেস্টার ছাড়া অন্যান্য সিমেস্টারের পড়ুয়াদের এক সিমেস্টার এগিয়ে দেওয়া হবে। তবে চূড়ান্ত সিমেস্টারের পরীক্ষা যথারীতি নেওয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। কারণ, অতিমারির পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চশিক্ষায় পঠনপাঠন ও পরীক্ষা কী ভাবে কখন হবে, তা স্থির করার জন্য ইউজিসি তার আগেই একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়েছে। প্রশ্ন ওঠে, কাদের নির্দেশ মেনে চলা হবে— ইউজিসি-র, নাকি রাজ্য সরকারের? অভিযোগ ওঠে, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা ও পঠনপাঠন বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও নির্দেশ দিতে পারেন কি না, সেই প্রশ্ন তোলেন শিক্ষা শিবিরের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজের অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার কী হবে, তা ঠিক করতে ইউজিসি ইতিমধ্যেই বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে। ইউজিসি-র কমিটির রিপোর্ট মানা হবে কি না, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের প্রেক্ষিতে এই প্রশ্ন বড় হয়ে উঠছে।
এই বিতর্কের মধ্যে দেশের প্রযুক্তি শিক্ষার নিয়ন্ত্রক সংস্থা অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকিনিক্যাল এডুকেশন (এআইসিটিই) এবং ইউজিসি জানিয়ে দেয়, বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট মেনেই তৈরি হবে নির্দেশিকা। সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়কে এগোতে হবে সেই নির্দেশিকার ভিত্তিতেই।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)