Derek O'Brien

‘রাজনৈতিক যুদ্ধ’ বলল তৃণমূল, পাল্টা বিজেপির

সংসদের দুই কক্ষে তৃণমূলের দুই দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও ডেরেক ও’ব্রায়েন এ দিন অভিযোগ করেছেন, রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করে কেন্দ্রীয় দল পাঠিয়ে এই কঠিন সময়ে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে আঘাত করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২০ ০৩:১৪
Share:

সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডেরেক ও’ব্রায়েন। —ফাইল চিত্র।

করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউন সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে বাংলায় কেন্দ্রীয় দল পাঠানো নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক অব্যাহত। রাজ্যের সঙ্গে আগে আলোচনা না করে একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্যে দল পাঠানোর পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সোমবারই চিঠি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনার সঙ্গে লড়াইয়ের মধ্যে রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকার রাজনৈতিক যুদ্ধে নেমেছে, এই অভিযোগে মঙ্গলবার সরব হল তৃণমূল। অন্য দিকে, কেন্দ্রীয় দলকে রাজ্যের ‘সঠিক পরিস্থিতি’র তথ্য দিতে সক্রিয় হল বিজেপি।

Advertisement

সংসদের দুই কক্ষে তৃণমূলের দুই দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও ডেরেক ও’ব্রায়েন এ দিন অভিযোগ করেছেন, রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করে কেন্দ্রীয় দল পাঠিয়ে এই কঠিন সময়ে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে আঘাত করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করে তৃণমূল নেতৃত্বের মন্তব্য, দিল্লি থেকে ‘অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজম’-এ দল পাঠানো হয়েছে! লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপবাবু বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দফতরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করছে। আইসিএমআর এবং নাইসেডের পরামর্শ মতো আমরা এগোচ্ছি। এই অবস্থায় কেন্দ্রের টিম পাঠানোর সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘আশা করব, শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। ভবিষ্যতে রাজ্যে প্রতিনিধি পাঠাল তা অবশ্যই আগে থেকে রাজ্য সরকারকে জানিয়ে নিয়মমাফিক করা হবে। তবেই না রাজ্যের কাছ থেকে পূর্ণ সহযোগিতা পাওয়া যাবে!’’

রাজ্যসভায় তৃণমূলের নেতা ডেরেক উদাহরণ দিয়ে বলেন, গুজরাতে ৫টি হটস্পট রয়েছে, ১৮৫০ জন করোনা আক্রান্ত। তামিলনাড়ুতে ৯টি হটস্পট, আক্রান্ত ১৪৭৭ জন। দিল্লিতেও একই হাল। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘কিন্তু সে সব ছেড়ে পশ্চিমবঙ্গের সেই জেলাগুলিকে বেছে নেওয়া হল, যেখানে নতুন করে করোনা আক্রান্তের ঘটনা নেই।’’

Advertisement

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহেরা অবশ্য পাল্টা অভিযোগ করেছেন, এক মাত্র বাংলাতেই রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় দলের সঙ্গে অসহযোগিতা করছে। দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের পরামর্শে বিজেপির চিকিৎসক-সাংসদ সুভাষ সরকার কেন্দ্রীয় দলকে রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে তথ্য জানিয়ে মেল পাঠিয়েছেন। আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা আড়াল করা, রেশন নিয়ে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব, স্বাস্থ্যকর্মীদের নিম্নমানের সুরক্ষা সরঞ্জাম দেওয়ার অভিযোগ করেছেন সুভাষবাবুরা।

কলকাতা ও শিলিগুড়িতে কেন্দ্রীয় দলকে দিনভর বসিয়ে রাখা এবং পরে কেন্দ্রের চিঠি আসার পরে বেরোতে দেওয়ার অভিযোগ এ দিন বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এই প্রসঙ্গে বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার যে ভাবে দল পাঠিয়েছে, তা নিয়ে অবশ্যই প্রশ্ন আছে। কিন্তু রাজ্য সরকার তাদের সঙ্গে সহযোগিতা করেও এই নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে, অভিযোগ করতে পারে। স্বচ্ছতাই সব চেয়ে বড় হাতিয়ার। কেন্দ্রীয় দলকে বাধা দিলে মনে হবে, কিছু লুকোনোর আছে বলে রাজ্য ভয় পাচ্ছে!’’ কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘কেন্দ্র ও রাজ্য এই ভাবে যুদ্ধ করলে বিপন্ন মানুষ আরও বিপন্ন হবেন। দু’পক্ষকেই যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মেনে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করতে হবে।’’ একই সুর পিডিএসের রাজ্য সম্পাদক অনুরাধা পূততুণ্ডেরও।

আরও পড়ুন: ঘরে সতর্ক থাকুন, শহরে ঘুরে বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

আরও পড়ুন: বেসরকারি স্কুলের ফি আংশিক মকুবের দাবি


(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement