প্রতীকী ছবি।
হাসপাতালে শয্যা পেতে অসুবিধার অভিযোগ দিকে দিকে। এই নিয়ে করোনা রোগীর পরিজনদের মধ্যে উৎকণ্ঠা ক্রমশ বাড়ছে। পরিস্থিতি সামলাতে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে শয্যা বাডানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। সরকারি অধিগৃহীত হাসপাতালেও শয্যা বাড়ানো হচ্ছে উল্লেখযোগ্য হারে। এ বার এই ধরনের শয্যা ব্যবস্থাপনায় নির্দিষ্ট বিধি মানার সুপারিশ করল রাজ্য সরকার। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের বক্তব্য, প্রয়োজন অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে শয্যা নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ। বুধবারেও প্রশাসন আশ্বস্ত করেছে, প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় যাঁরা পেয়েছেন, দ্বিতীয় ডোজ় পেতে তাঁদের যাতে সমস্যা না-হয়, তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা হবে।
স্বাস্থ্য দফতর জানায়, অধিগৃহীত বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে শয্যা পেতে গেলে স্বাস্থ্য ভবনের ‘অ্যাডমিশন সেলের’ সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। সেখানকার চিকিৎসকেরা রোগীর প্রয়োজন ও শারীরিক অবস্থা বুঝে ভর্তির ব্যবস্থা করবেন। তার জন্য নির্দিষ্ট একটি নথিভুক্তি পদ্ধতি মানার সুপারিশ করা হয়েছে। কারণ, ওই সব শয্যায় থাকা রোগীদের চিকিৎসার খরচ বহন করে সরকারই। ব্যক্তিগত ভাবে সেই সব হাসপাতালে ভর্তি হলে সংশ্লিষ্ট রোগীকে ‘প্রাইভেট পেশেন্ট’ বলে গণ্য করা হবে। বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানোর আগে সরকারি পরিকাঠামোয় ভর্তিতে অগ্রাধিকার থাকছে। জেলাশাসক বা জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকের সুপারিশে কোনও রোগী এলে ভর্তির প্রশ্নে অগ্রাধিকার পাবেন তিনি। হাসপাতালগুলিতে শয্যা খালি থাকলে কোনও রোগীকে ফেরানো যাবে না। খুব প্রয়োজনে কোনও রোগীকে অন্যত্র পাঠাতে হলে তাঁর শারীরিক অবস্থা আগে স্থিতিশীল করে তবেই এগোতে হবে।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, যাঁরা বেসরকারি হাসপাতাল থেকে প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় নিয়েছেন, ৩০ এপ্রিলের পরে তাঁরা দ্বিতীয় ডোজ় পাবেন কি না, তা নিয়ে উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, ওই দিনের পরে প্রতিষেধক অবশিষ্ট থাকলে বেসরকারি হাসপাতালগুলির তরফে সরকারের ঘরে তা ফেরত দেওয়ার কথা। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের আশ্বাস, বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ় নিশ্চিত করতে সুবিধাজনক জায়গায় শিবির করে তা দেওয়ার ব্যবস্থা হবে। সেখানে বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধি ও সরকারি আধিকারিকেরা এই ব্যবস্থা করবেন। বড়জোর পরিষেবা বাবদ সামান্য কিছু অর্থ নিতে পারেন বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
স্বাস্থ্য-কর্তারা জানান, ইতিমধ্যেই সব জেলায় ২৪x৭ ভিত্তিতে সমন্বয় কমিটি গড়া হয়েছে জেলাশাসকদের অধীনে। অতিরিক্ত জেলাশাসকেরা গোটা বিষয়টি দেখভাল করবেন। রোগী ভর্তি, অক্সিজেনের জোগান, অ্যাম্বুল্যান্স, শব ব্যবস্থাপনা-সহ যাবতীয় কাজ করবে ওই কো-অর্ডিনেশন সেল। দিনে দু’বার করে সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখবেন দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারেরা।
শব ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে। রাজ্য সরকারের বক্তব্য, কলকাতা পুরসভা ওয়ার্ড-ভিত্তিতে চিকিৎসক, অ্যাম্বুল্যান্স, শব ব্যবস্থাপনা এবং শববাহী গাড়ির পৃথক বন্দোবস্ত করেছে। জেলা স্তরে থানা-পুরসভাকেও এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, মৃত্যুর খবর পুরসভা, থানা বা পঞ্চায়েতে দেওয়া হলেই দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।