জুন মাসে এ রাজ্যে করোনার সংক্রমণ শীর্ষবিন্দুমুখী, তা মেনে নিচ্ছেন স্বাস্থ্য কর্তারা। ছবি: এএফপি।
রাজ্যে এখনও পর্যন্ত এক দিনে রেকর্ড সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪৯ জন। মারা গিয়েছেন ১৩ জন। সব মিলিয়ে রাজ্যে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা সাত হাজার ৭৩৮। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে সংক্রমণের তালিকায় শীর্ষে পশ্চিম মেদিনীপুর, কলকাতা এবং তার পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। সব মিলিয়ে রাজ্যে কো-মর্বিটিতে ৭২ জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু বাদ দিয়ে করোনায় মৃত ৩২৪ জন।
তবে রাজ্যে রোগমুক্তির হার ৪০ শতাংশের বেশি যা স্বস্তি জুগিয়েছে স্বাস্থ্য কর্তাদের। তিন হাজারের বেশি আক্রান্ত রোগমুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
সব মিলিয়ে জুন মাসে এ রাজ্যে যে করোনার সংক্রমণ শীর্ষবিন্দুমুখী তা মেনে নিচ্ছেন স্বাস্থ্য কর্তারা। তাঁদের আশঙ্কা জুলাই মাস পর্যন্ত এই হার বজায় থাকতে পারে। এমসের অধিকর্তারও ইঙ্গিত গোটা দেশে আগামী দু’মাসে সংক্রমণ আরও বাড়বে।
রবিবার স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, রাজ্যে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা চার হাজার ৪৮৮ জন। তার মধ্যে এক হাজার ৩৮৮ জনই কলকাতায়। গত ২৪ ঘন্টায় কলকাতায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় যে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে তার মধ্যে কলকাতার সাত জন।
আরও পড়ুন: ভারতে করোনা সংক্রমণ শীর্ষে পৌঁছবে আগামী ২-৩ মাসে, হুঁশিয়ারি এমস-এর অধিকর্তার
জুন মাসের শুরু থেকেই রাজ্যে নতুন করে সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে ফিরে আসার ফলেই এই বৃদ্ধি বলে দাবি করেছেন স্বাস্থ্য কর্তাদের একাংশ। তবে আনলকডাউন পর্বে রাস্তায় মানুষের ভিড় বেড়ে যাওয়াও যে আরেকটি কারণ তা স্বীকার করেছেন স্বাস্থ্য কর্তারা। তাঁরা ইঙ্গিত দিচ্ছেন, এ মাসের বাকি দিনগুলোয় পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য আরও কোভিড কেয়ার সেন্টার প্রয়োজন। সেই কারণে নতুন নতুন জায়গা বাছাই করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত প্রায় ১০ হাজার, মোট আক্রান্তে স্পেনকে টপকে বিশ্বে পাঁচ নম্বরে ভারত
পশ্চিম মেদিনীপুরের পাশাপাশি, জলপাইগুড়ি উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরেও বাড়ছে সংক্রমণ। এঁদের মধ্যে অধিকাংশই পরিযায়ী শ্রমিক বলে দাবি স্বাস্থ্য দফতরের। উত্তরবঙ্গে করোনার প্রকোপে কার্যত রোগী ভর্তি বন্ধ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, মেডিক্যাল কলেজের ১১ জন চিকিৎসক এবং দু’জন ল্যাবরটারি সহায়ক আক্রান্ত। ফলে ৩৫ জন চিকিৎসক এবং ৪৫ জন নার্স কোয়রান্টিনে। তাই সরকারি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে মুমূর্ষু রোগী ছাড়া অন্য কোনও রোগী ভর্তি করা হবে না এই মুহূর্তে। কারণ চিকিৎসার পরিকাঠামো নেই।
অন্য দিকে রাজ্য সরকারি ব্যবস্থায় কোভিড পরীক্ষার আরও দুটি নতুন কেন্দ্র হিসাবে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ এবং সিউড়ি জেলা হাসপাতাল তালিকায় যুক্ত হল। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুয়ায়ী, প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার নমুনা টেস্ট করা হচ্ছে। অন্যদিকে কলকাতায় গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিতদের মধ্যে কলকাতা পুলিশের আরও সদস্য রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। দক্ষিণ কলকাতার একটি থানার ওসির দেহরক্ষী এবং অন্য এক কনস্টেবল আক্রান্ত বলে জানা গিয়েছে। কলকাতা পুলিশের আক্রান্তের সংখ্যা ১৬০ পেরিয়ে গিয়েছে। মারাও গিয়েছেন এক কনস্টেবল।
(এই প্রতিবেদনটি প্রথম বার প্রকাশের সময় ভুলবশত রাজ্যে করোনা-আক্রান্তের মৃতের সংখ্যা ৩২৫৪ লেখা হয়েছিল। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা আন্তরিক দুঃখিত।)