ফাইল চিত্র।
অভিভাবকদের অনুমতিক্রমে নবম, দশম, একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা ২১ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুলে যেতে পারবে বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক নির্দেশ দিলেও রাজ্য সরকার সেই রাস্তায় হাঁটতে রাজি নয়। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় মঙ্গলবার জানিয়ে দিয়েছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না-হলে এ রাজ্যে স্কুল-কলেজ খোলা হবে না।
পশ্চিমবঙ্গে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়-সহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলে সরকার আগেই ঘোষণা করেছিল। তার পরে কেন্দ্রের নির্দেশ আসে, অভিভাবকেরা রাজি থাকলে ২১ সেপ্টেম্বর নবম থেকে দ্বাদশের ক্লাস চালু করতে হবে। রাজ্যের সিদ্ধান্ত ও কেন্দ্রীয় নির্দেশের মধ্যে পড়ে দুশ্চিন্তা ও অনিশ্চয়তায় ভুগছিলেন পড়ুয়া, অভিভাবকেরা। দুশ্চিন্তার মূলে একটিই প্রশ্ন: করোনার ক্রমবর্ধমান প্রকোপের মধ্যে ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানো যাবে কী ভাবে? স্কুল-কলেজ ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কথা মনে করিয়ে দিয়ে পার্থবাবু জানান, এর পরে রাজ্য যদি বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে, তখন দেখা যাবে। “কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েরা তো ‘সিনিয়র’। কিন্তু করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা যখন হুহু করে বাড়ছে, সেই সময়ে স্কুল কী ভাবে খুলবে, মাথায় আসছে না! আমাদের যে-গ্লোবাল কমিটি রয়েছে, তারাও শঙ্কিত,’’ বলেন মন্ত্রী। স্কুলে কিছু ক্লাস শুরুর কেন্দ্রীয় নির্দেশ নিয়ে পার্থবাবু আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন: কোনও কোনও অভিভাবক হয়তো অনুমতি দিলেন, আবার কেউ কেউ দিলেন না। তা হলে স্কুল চলবে কী ভাবে? এ দিন তিনি আবার জানান, তাঁরা ছেলেমেয়েদের স্বাস্থ্য নিয়েই বেশি উদ্বিগ্ন। তবে পড়ুয়াদের কাছে কী করে পৌঁছনো যায়, কী ভাবে চালু রাখা যায় পড়াশোনা— তা দেখা দরকার। এবং তাঁরা সেটা দেখছেনও।
৯০% নম্বর পেয়েও অনেকে এ বার কলেজে ভর্তি হতে পারছেন না। শিক্ষামন্ত্রী জানান, যথেষ্ট আসন আছে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে। আসল সমস্যা পছন্দের। পড়ুয়ারা প্রেসিডেন্সি, সেন্ট জেভিয়ার্স, বেথুন, আশুতোষের মতো কয়েকটি কলেজেই ভর্তি হতে চান। প্রতিটি কলেজে ভর্তির আবেদনের জন্য আলাদা ফি দিতে হয়। কেন্দ্রীয় ভাবে ভর্তির ব্যবস্থা হলে তা দিতে হয় না। সেই ব্যবস্থা হচ্ছে না কেন? কেন্দ্রীয় ভাবে ভর্তির ভাবনা নস্যাৎ করে দিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর পাল্টা প্রশ্ন, এ বার তো স্নাতক স্তরে ভর্তির আবেদন করতে ফি লাগছে না। পড়ুয়ারা যত খুশি কলেজে আবেদন করছেন। তা হলে কেন্দ্রীয় ভাবে ভর্তি-প্রক্রিয়ার প্রয়োজন কী? ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির কথা তুলে পার্থবাবু জানান, ওখানে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড কেন্দ্রীয় ভাবে কাউন্সেলিং করছে। কিন্তু অনেক বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজই কাউন্সেলিংয়ের বিষয়টি তুলে দেওয়ার জন্য আবেদন করছে তাঁর কাছে।
আরও পড়ুন: সংক্রমণের হার বেড়ে ৭ পেরোল, রাজ্যে মৃত ৫৯
এ দিন নিজের বিধানসভা কেন্দ্র বেহালা পশ্চিমে কৃতী ছাত্রছাত্রীদের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে গিয়ে পার্থবাবু স্কুল-কলেজের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন। তাঁর আশ্বাস, দুঃস্থ ও মেধাবী পড়ুয়াদের চিন্তা নেই। সরকার তাঁদের পাশে আছে। সেই সঙ্গে তিনি জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই এ দিন অনুষ্ঠান করা হয়েছে।