করোনা নিয়ে নবান্নে প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে বেরনোর পর বিমান বসু, প্রদীপ ভট্টাচার্য, রবীন দেব, মনোজ ভট্টাচার্য প্রমুখ। নিজস্ব চিত্র।
ভোটের মধ্যেই করোনা মোকাবিলার প্রশ্নে সরকারের পাশে দাঁড়াল বিরোধী জোট সংযুক্ত মোর্চা।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলার ক্ষেত্রে কী করণীয়, তা নিয়ে শনিবার নবান্নে গিয়ে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন মোর্চার নেতারা। পরে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু জানিয়েছেন, আলোচনা ছিল যথেষ্ট ‘ইতিবাচক’। কেন্দ্রীয় সরকার অতিমারীর সঙ্গে যুদ্ধে রাজ্যগুলিকে যে সহযোগিতা করছে না, সেই বিষয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার পরে কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যের প্রস্তাব— রাজ্যের সব সাংসদ এই আপৎকালীন পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় সহায়তার জন্য কেন্দ্রের কাছে দাবি জানাতে পারেন।
নবান্নে এ দিন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বরাষ্ট্রসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী ও স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস মিলে মোর্চার প্রতিনিধিরা। করোনা মোকাবিলায় হাসপাতালের বেড, ওষুধ, অক্সিজেন-সহ পর্যাপ্ত পরিকাঠামোর দাবি জানান তাঁরা। করোনায় মৃত রোগীদের শেষকৃত্য ঘিরে ফের যে অচলাবস্থা তৈরি হচ্ছে, সেই প্রসঙ্গও এসেছিল আলোচনায়। পক্ষান্তরে, রাজ্য সরকার কী ভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে এবং কোথায় সমস্যা হচ্ছে, সেই বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন প্রশাসনিক কর্তারা।
নবান্ন থেকে বেরিয়ে বিমানবাবু বলেন, ‘‘আমরা যুদ্ধ করতে আসিনি! করোনা পরিস্থিতি নিয়ে যা আমরা বলেছি, তার সঙ্গে টক্কর দেওয়ার মনোভাব সরকারের ছিল না। আলোচনা ইতিবাচক হয়েছেই বলব।’’ সেই সঙ্গে বিমানবাবু উল্লেখ করেছেন, ‘‘আগের বারের মতোই এই পরিস্থিতিতে মানুষের দাবি-দাওয়া সংক্রান্ত প্ল্যাকার্ড নিয়ে আমরা রেড রোডের মতো কোনও জায়গায় ভিড় এড়িয়ে দাঁড়াব। তখন যেন গ্রেফতার করে লালবাজারে নিয়ে যাওয়ার মতো কাজ-কারবার আবার না হয়!’’ কংগ্রেসের প্রদীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘প্রস্তুতির ক্ষেত্রে কেন্দ্র তো বটেই, রাজ্য সরকারেরও কিছু গাফিলতি ছিল। দ্বিতীয় ঢেউ আসতে শুরু করার পরেও প্রায় আড়াই মাস সময় চলে গিয়েছে। তবে এখন মানুষকে বাঁচানোর প্রশ্ন। তার জন্য যা যা দরকার, আমরা সবই করতে প্রস্তুত।’’
টিকাকরণ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের মনোভাবেরও এ দিন কড়া সমালোচনা করেছেন মোর্চার নেতারা। তাঁদের দাবি, নিখরচায় দেশের সব নাগরিককে টিকা দেওয়া অবশ্যই কেন্দ্রের কর্তব্য। এখানে ‘রাজনৈতিক ফায়দা’ খুঁজে লাভ নেই। ল্যানসেটের ইন্ডিয়া কমিশনের বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ মাফিক জুলাই মাসের মধ্যে ১৮ বছরের কম বয়সীদেরও টিকার আওতায় আনার দাবি তুলেছেন বিমানবাবুরা।