প্রতীকী ছবি।
এ বার চিকিৎসক, নার্স-সহ সব স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারীর পরিবারের সদস্য এবং পল্লি চিকিৎসকদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে করোনার টিকা দেবে রাজ্য সরকার। বুধবার এ বিষয়ে নির্দেশিকা জারি করেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। বিষয়টি দেখভালের জন্য জেলার ক্ষেত্রে জেলাশাসক ও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের এবং শহরে কলকাতা পুরসভাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরেই ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ), ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরাম, অ্যাসোসিয়েশন অব হেল্থ সার্ভিস ডক্টর্স, সার্ভিস ডক্টর্স ফোরামের মতো বিভিন্ন সংগঠন এবং চিকিৎসকদের যৌথ মঞ্চ প্রোটেক্ট দ্য ওয়ারিয়রসের তরফে পরিবারের সদস্যদের বিষয়ে বার বার রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানানো হচ্ছিল। আইএমএ-র রাজ্য শাখার সম্পাদক চিকিৎসক শান্তনু সেন বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী থেকে মুখ্যসচিব, স্বাস্থ্যসচিব-সহ সকলের কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম। অবশেষে বিষয়টিতে সিলমোহর পড়েছে।"
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই বলছেন, "চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারীরা করোনা রোগীর একেবারে সামনে গিয়ে কাজ করেন। তাঁদের অধিকাংশেরই টিকা নেওয়া হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তাঁরা সহজেই পোশাকের সঙ্গে করোনা ভাইরাস নিয়ে বাড়িতে আসছেন। তাতে স্বজনদের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি। তাতে মানসিক দুশ্চিন্তা থাকে। সংক্রমণ কমানোর জন্য নৈতিক ভাবেও সেটা ঠিক নয়।"
রাজ্যে সংক্রমণের হারও এখন নিম্নমুখী। এ দিন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৩৮৪ জন। মৃত্যু হয়েছে ৯৫ জনের। উত্তর ২৪ পরগনাতেও আক্রান্ত এক হাজারের নীচে (৯৯৬) নেমেছে। কলকাতায় আক্রান্ত ৫৪৭।
টিকা কর্মসূচিকে আরও সরল করে গতি আনতে 'বেন-ভ্যাক্স' পোর্টাল এনেছে রাজ্য। এ দিন থেকে সেটি পরীক্ষামূলক ভাবে কাজ শুরু করেছে বিভিন্ন জেলায়। তবে এই মুহূর্তে শুধু টিকা কেন্দ্রগুলিই ওই পোর্টাল ব্যবহার করতে পারবে। স্বাস্থ্য শিবির সূত্রের খবর, ১৮-৪৪ বছর বয়সিদের টিকা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতকারী সংস্থা থেকে সরাসরি প্রতিষেধক কিনছিল রাজ্য। তাই সেই টিকা দেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করা, দ্বিতীয় ডোজ়ের মেসেজ পাঠানো এবং তার শংসাপত্র দেওয়ার জন্য ওই পোর্টাল তৈরি হয়েছে।
এ দিন ওই পোর্টালের উদ্বোধন স্থগিত রাখা হয়। স্বাস্থ্য সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্প্রতি টিকা নীতিতে পরিবর্তন এনে জানিয়েছেন, রাজ্য সব টিকাই পাবে বিনামূল্যে। তাই আপাতত উদ্বোধন বন্ধ রাখা হয়েছে। রাজ্য নিজস্ব পোর্টাল চালু করলেও নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে সব তথ্যই কো-উইন পোর্টালে নথিভুক্ত করা হবে বলে জানান এক আধিকারিক।