ফাইল চিত্র।
মাত্র দু’সপ্তাহ আগে করোনায় বাবাকে হারিয়েছি। বাবা রেলে চাকরি করতেন। বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর। সুগার ও রক্তচাপজনিত সমস্যা ছিল। তবে বাবা খুবই স্বাস্থ্য সচেতন ছিলেন। রোজ সকালে হাঁটতে যেতেন। শরীর চর্চা করতেন। মাস্ক পরতেন। নিয়মিত স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করতেন। অফিস থেকে ফিরে জামাকাপড় বাইরে রেখে তবেই ঘরে ঢুকতেন। তার পর স্নান করেই ঘরে আসতেন।
এত স্বাস্থ্য বিধি মানার পরেও বাবা করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। মালদহ মেডিক্যালে ভর্তি করেও তাঁকে বাঁচাতে পারিনি। মাকে আমি আগেই হারিয়েছিলাম। একমাত্র দিদির বিয়ে হয়েছে। এখন আমি একা। চার দিক হঠাৎ করেই যেন শূন্য হয়ে গিয়েছে।
মালদহ জেলায় রোজই হু হু করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে মৃত্যুও। কিন্তু তার পরেও দেখছি অনেকে করোনা নিয়ে সচেতন নন। বিধানসভা ভোট থাকায় প্রচারে অনেক নেতা-নেত্রী আসছেন। তাঁদের সভায় ভিড় করছেন সাধারণ মানুষ। এই মিছিল-মিটিংয়ে উপচে পড়া ভিড়ে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। যে হেতু এই জেলায় সংক্রমণের হার বেশি, তাই নেতা-নেত্রীদের কাছে করজোড়ে অনুরোধ করছি, দোহাই আপনাদের, প্রচার বন্ধ করুন। তাতে কিছু মানুষ অন্তত কম আক্রান্ত হবেন।
অকারণে যাঁরা হাটে-বাজারে বা বাইরে বের হচ্ছেন, তাঁদেরও সাবধান হওয়া উচিত। দেখা যাচ্ছে অনেকেই মাস্ক পরছেন না, দূরত্ব বিধিও মানছেন না। এ ভাবে যদি চলাফেরা করা হয়, তবে সংক্রমণ আরও মারাত্মক আকার নেবে। তখন দেখা যাবে যে, মালদহ মেডিক্যালে করোনা রোগী ভর্তি করার মতো শয্যা থাকবে না। মৃত্যুও বেড়ে চলবে!
তাই দয়া করে আগে থেকে সাবধান হোন। আর কারও চারপাশ যেন আমার মতো শূন্য হয়ে না যায়।
(মালদহের ইংরেজবাজার শহরের বাসিন্দা)