প্রতীকী ছবি।
টাকা দিলে টিকা মিলবে, এটা সরকারের সাধারণ নীতি নয়। বৃহস্পতিবার বণিকসভার বৈঠকে দ্রুত এবং বেশি সংখ্যক মানুষের টিকাকরণের যে কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, তার ব্যাখ্যা দিয়ে শনিবার প্রশাসনের এক শীর্ষকর্তা জানান, ‘সুপার স্প্রেডার’ গোত্রের মানুষদের অগ্রাধিকার দিয়ে টিকাকরণ চাইছে রাজ্য। এ ক্ষেত্রে বণিকসভাগুলি নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে তাদের কর্মী-শ্রমিকদের টিকাকরণের ব্যবস্থা করুক। এটা করার ক্ষেত্রে তাদের যদি কোথাও কোনও অসুবিধা হয়, তা হলে সরকারি তহবিলে টিকার খরচ বাবদ টাকা দিলে রাজ্যই সেই ব্যবস্থা করতে প্রস্তুত।
সংশ্লিষ্ট কর্তার বক্তব্য, “রাজ্য মানুষকে বিনামূল্যেই টিকা দিতে চায়। সেই অবস্থান বদলায়নি। বহু মানুষকে টিকা দিতে হচ্ছে রাজ্যকে। কোভিডের তৃতীয় ঢেউ ঠেকাতে সার্বিক এবং দ্রুত টিকাকরণের জন্য জোগান নিশ্চিত করতে বিপুল টাকা খরচ করে টিকা কিনতে হচ্ছে সরকারকেও। এরই সঙ্গে, শিল্প এবং অর্থনীতির স্বার্থে শিল্পমহল তাদের কর্মী-শ্রমিকদের টিকাকরণে এগিয়ে এলে রাজ্য স্বাগত জানিয়ে সেই পদ্ধতিকে সুচালিত করতে প্রস্তুত। এই ব্যবস্থা শর্তাধিন নয়। তবে কখনও কোনও কর্মী-শ্রমিক টিকাকরণের আওতা থেকে বাদ থেকে গেলে সরকারি ব্যবস্থাতেই সংশ্লিষ্টের টিকাকরণ হবে।”
ইতিমধ্যেই ‘সুপার স্প্রেডার’ গোত্র স্থির করে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে হকার, রিক্সাচালক, মাছ-সব্জি বিক্রেতা, গৃহকর্মে সহায়ক, কেবল কর্মী, সারাই কর্মী, শিক্ষক-শিক্ষিকা-সহ আরও কিছু ক্ষেত্রের প্রায় ১৮ লক্ষ মানুষকে প্রতিষেধক দেওয়া গিয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতরের দাবি। এ বার শিল্প-ক্ষেত্রে কর্মী-শ্রমিকদেরও জরুরি ভিত্তিতে টিকাকরণ হলে নির্মাণ-সহ একাধিক ক্ষেত্রকে ক্রমে সচল করা যায়।
পুরোপুরি লকডাউন না হলেও, কোভিডের দ্বিতীয় ধাক্কায় গত মাসের মাঝামাঝি থেকে বিভিন্ন গতিবিধিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে হয়েছে। সরকার চলতি নিয়ন্ত্রণবিধির পুনর্বিবেচননা করতে পারে ১৬ জুন। অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে হোটেল-রেস্তোরাঁ, তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প-সহ কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ কিছুটা শিথিল করার ভাবনাচিন্তা রয়েছে সরকারের। তাই রাজ্য চাইছে, বণিকসভা, শিল্প এবং অন্যান্য সংগঠনগুলিও তাদের কর্মী-শ্রমিকদের দ্রুত টিকাকরণের ব্যবস্থা করুক।