গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
ক্রিসমাসে পার্ক স্ট্রিটের জনস্রোত চিন্তা বাড়িয়েছে প্রশাসনের। যার জেরে আগেভাগেই বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণের রাতে উৎসবে সংযম পালনের আহ্বান জানিয়েছে নবান্ন। নির্দেশিকা জারি করেছে কলকাতা হাইকোর্টও। কেন যে এই সতর্কবার্তা আহ্বান তা স্পষ্ট হয়ে গেল বুধবার রাজ্যের রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত বুলেটিনে। এ দিন গোটা রাজ্যে করোনা সংক্রমণের ছবিটা অনেকটাই আশাব্যঞ্জক। কিন্তু কলকাতায় গত কয়েক দিনের তুলনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটা বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে মৃতের সংখ্যাও।
বুধবার রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে কোভিড সংক্রমণ ধরা পড়েছে ১ হাজার ১৭৮ জনের শরীরে। যা অবশ্য মঙ্গলবারের থেকে কম। রাজ্যে এখন মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লক্ষ ৫০ হাজার ৮৯৩। রাজ্যে সক্রিয় করোনা রোগী রয়েছেন ১২ হাজার ৩৮১ জন। যা মঙ্গলবারের তুলনায় ৪০৭ জন কম।
রাজ্যে করোনায় মৃতের সংখ্যা এক সময় ৫০-এর গণ্ডি ছুঁয়েছিল। সম্প্রতি সেই প্রবণতা আর দেখা যাচ্ছে না। গত ২১ ডিসেম্বরের পর গত এক সপ্তাহে রাজ্যে দৈনিক মৃত্যু চল্লিশের উপরে যায়নি। বুধবার ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর ২৪ পরগনায় ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। কলকাতায় মৃত ৮। এ ছাড়া দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এই নিয়ে রাজ্যে মোট ৯ হাজার ৬৮৩ জনের মৃত্যু হল।
আরও পড়ুন: সৌম্যেন্দুর অপরাধ কী? ‘ন্যায়বিচার’ চেয়ে মমতাকে চিঠি মধ্যম অধিকারীর
আরও পড়ুন: আনন্দ করুন, বাড়াবাড়ি করবেন না, বর্ষবরণের আগে বার্তা রাজ্যের
গত বেশ কয়েক দিন ধরেই কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনায় করোনার প্রকোপে কিছুটা রাশ টানা গিয়েছে। কিন্তু বুধবার কলকাতায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ফের ৩০০-রও বেশি। মঙ্গলবার দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ২৭০ থেকে বেড়ে এ দিন কলকাতায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা একলাফে হয়েছে ৩২৬। উত্তর ২৪ পরগনায় নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৩২৫ জন।
রাজ্যের বাকি অংশে কোভিড সংক্রমণের জেলাভিত্তিক ছবিটা এখন অনেকটাই স্বস্তিদায়ক। কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনা বাদ দিলে কোনও বুধবারও কোনও জেলাতেই দৈনিক সংক্রমণ ১০০ ছোঁয়নি। হাওড়ায় ৭৬ জন এবং হুগলিতে ৭৩ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এ দিন।
রাজ্যে মোট আক্রান্তের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৫ লক্ষ ২৮ হাজার ৮২৯ জন রোগীই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এই পরিসংখ্যানে ভর করে রাজ্যে প্রতি দিনই সুস্থতার হার বাড়ছে। মঙ্গলবার তা ছিল ৯৫.৯২ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টা পর, বুধবার তা হয়েছে ৯৫.৯৯ শতাংশ।
প্রতিদিন যত সংখ্যক মানুষের কোভিড পরীক্ষা হয় এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাকে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার বলে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে টেস্টের সংখ্যা অনেকটা বেড়েছে। মঙ্গলবার পরীক্ষা হয়েছিল ৩৭ হাজার ২৪৫ জনের। বুধবার হয়েছে ৩৯ হাজার ১১০ জনের। কিন্তু নতুন সংক্রমিতের সংখ্যা বেশ কিছুটা নীচে নেমে যাওয়ায় সংক্রমণের হার কমে হয়েছে ৩.০১ শতাংশ।