ফাইল চিত্র।
গত বছর কোভিড সংক্রমণের সর্বোচ্চ পর্যায়ে যা ব্যবস্থাপনা ছিল, এক সপ্তাহের মধ্যে তার থেকেও বেশি প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এই কাজে সবচেয়ে জোর দেওয়া হয়েছে কোভিড-শয্যার উপর। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সেই কারণে কলকাতা এবং তার লাগোয়া শহরতলি এলাকায় বেসরকারি স্তরে ২৫% এবং সরকারি স্তরে ২০% কোভি়ড-শয্যা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা, কোভিডের প্রথম ধাক্কার থেকে দ্বিতীয় ঢেউ অনেক বেশি মারাত্মক বলেই এই পদক্ষেপ করতে হচ্ছে সরকারকে।
গত বছরের অক্টোবরে কোভিড সংক্রমণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল। তখন সর্বাধিক সংখ্যায় পরিকাঠামো প্রস্তুত করেছিল রাজ্য। সংক্রমণের মাত্রা একেবারে কমে যাওয়ার পরে ক্রমশ সেই ব্যবস্থাপনাও শিথিল করা হয়। বেসরকারি এবং সরকারি স্তরে যে সংখ্যক কোভিড-শয্যার ব্যবস্থা হয়েছিল, তা-ও ক্রমে কমিয়ে আনা হয়। কিন্তু খুব সম্প্রতি আরও আগ্রাসী হয়েছে সংক্রমণের চরিত্র।
এক স্বাস্থ্যকর্তার বক্তব্য, “বড় বড় বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিংহোমগুলি কলকাতা বা তার আশেপাশেই রয়েছে। আবার এইসব এলাকায় সংক্রমণের হারও অনেক বেশি। তবে শয্যা বাড়ানোর নির্দেশ রাজ্যের সর্বত্র কার্যকর হবে। গত বছরের সর্বোচ্চ পর্যায়ে কোভিড-শয্যা যত সংখ্যায় ছিল, সরকারি এবং বেসরকারি মিলিয়ে তার থেকে অন্তত ৪৫% বেশি শয্যা প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে।” শুক্রবারই রাজ্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালের নতুন একটি ভবনে কোভিড-পরিকাঠামো তৈরি করা হবে। সেখানে সাধারণের সঙ্গে আইটিইউ শয্যাও রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সামগ্রিক পরিচালনার জন্য চিকিৎসকদের একাধিক দলকে একেকটি দায়িত্বও দিয়েছে
স্বাস্থ্য ভবন।
চলতি ভোটে বিপুল সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান এবং রাজ্য পুলিশ কাজ করছেন। রাজ্য পুলিশের বেশিরভাগেরই টিকাকরণ হলে গেলেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের কী পরিস্থিতি তা চট করে বোঝা সম্ভব নয়। তাই স্বাস্থ্য দফতরের সিদ্ধান্ত, পুলিশের কেউ প্রতিষেধকের আওতার বাইরে এখনও থেকে গেলে, তাঁকে তা দ্রুত দিয়ে দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর কোনও জওয়ানের অসুস্থতা
বা উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে আরটিপিসিআর পরীক্ষা করানো হবে। পুলিশকর্মীদের জন্য ১২টি পুলিশ হাসপাতালে থাকা ৩৪০টি শয্যাকে সেফ-হোমের কাজে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইএসআই হাসপাতালগুলিতেও অন্তত এক হাজার শয্যা সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। একইসঙ্গে, আগে চালু করা টেলি-মেডিসিন ব্যবস্থা পুনরায় চালু করার পাশাপাশি সেখানে ভিডিয়ো মাধ্যমে কথা বলার সুবিধা যুক্ত করার চেষ্টা করছে স্বাস্থ্য দফতর।
স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, “এক সপ্তাহের মধ্যে গোটা ব্যবস্থা কার্যকর করতে বলা হচ্ছে। অ্যাম্বুল্যান্স, অক্সিজেনের জোগানও যাতে স্বাভাবিক থাকে, সে দিকেও বিশেষ নজর রাখতে বলা হচ্ছে জেলা প্রশাসনগুলিকে।”