প্রতীকী ছবি।
জেলা হোক বা ব্লক, প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে নিয়ে আসতে হবে করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট। গত শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের দেওয়া এমনই এক বিজ্ঞপ্তি ঘিরে আলোড়ন পড়ে। প্রশ্ন ওঠে, এমনটা কি আদৌ বাধ্যতামূলক করা যায়! তা ছাড়া, এক জন চাইলেই করোনা পরীক্ষা করতে পারবেন, এমন পরিকাঠামোই বা কোথায়! বিরোধীদের কটাক্ষ ছিল, এ সব সাধারণ মানুষকে এড়ানোর কৌশল।
বিতর্কের মুখে শেষ পর্যন্ত ওই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারই করে নিল জেলা প্রশাসন। রবিবার জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কেউ কেউ ভুল বুঝছিলেন। ওই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করা হয়েছে।’’ আগের বিজ্ঞপ্তি বাতিল হয়েছে মেনেই জেলাশাসক রশ্মি কমলের ব্যাখ্যা, ‘‘নির্দেশ নয়, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মানুষের কাছে একটি আবেদন রাখা হয়েছিল। এখন জেলার সব ব্লকে অ্যান্টিজেন টেস্ট হচ্ছে। সব ব্লকে আরটি-পিসিআরে পরীক্ষার জন্য সোয়াব সংগ্রহের ব্যবস্থা আছে। আমরা চাইছি, সাধারণ মানুষ এর সুযোগ নিন।’’
প্রশাসনের অন্দরেই এখন করোনা সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। এই জেলায় প্রশাসনের শতাধিক আধিকারিক-কর্মী করোনায় আক্রান্ত। সংক্রমিত তিন বিডিও। জেলা প্রশাসনের এক সূত্রের ব্যাখ্যা, একদিকে করোনা পরীক্ষার হার আরও বাড়ানো, সংক্রমণের গতিবিধি বোঝা, অন্য দিকে করোনা মোকাবিলায় যাঁরা প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছেন, সেই সব আধিকারিকদের সুরক্ষিত রাখা, সর্বোপরি সাধারণ মানুষকে সুরক্ষিত রাখা, মূলত এ সব উদ্দেশ্যেই ওই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। শুক্রবারই ব্লকে ব্লকে পৌঁছে যায় ‘কোভিড-১৯ মহামারির প্রেক্ষাপটে একটি আবেদন’ শীর্ষক ওই বিজ্ঞপ্তি। সেখানে লেখা ছিল, ‘কোনও প্রশাসনিক ভবনে, জেলা বা ব্লকস্তরের প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করতে হলে অবশ্যই নিম্নোক্ত নিয়মাবলি মেনে চলুন। অন্যথায় জেলার বা ব্লকের প্রশাসনিক আধিকারিকেরা সংক্রমিত হচ্ছেন ও জেলার প্রশাসন ওই নিয়মাবলিতেই উল্লেখ ছিল— ‘সাক্ষাৎপ্রার্থীদের অবশ্যই কোভিড-১৯ নেগেটিভ রিপোর্ট দেখাতে হবে, যা পরীক্ষা করার পরের ১০ দিনের জন্য বৈধ বলে বিবেচিত হবে।’
আজ, সোমবার থেকে ওই বিজ্ঞপ্তি কার্যকরের কথা ছিল। বিতর্কের মুখে তার আগেই তা প্রত্যাহার করা হল। প্রশাসন সূত্রে খবর, পরে সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হতে পারে।