গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
রাজ্যে একধাক্কায় দৈনিক করোনা সংক্রমণ অনেকটাই কমে গেল। গত ৬ ডিসেম্বর শেষ বার রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ ৩ হাজারে ঠেকেছিল। তার পর ওঠাপড়া নেমে থাকলেও, গত ১৫ দিনে সংখ্যাটা ৩ হাজার ছোঁয়নি। রবিবার দৈনিক সংক্রমণ ১ হাজার ৯৭৮-এ এসে ঠেকেছিল। সোমবার তা আরও কমে ১৫০০-য় দাঁড়িয়েছে। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় ফের ৪১ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
এ দিন সন্ধ্যায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১ হাজার ৫১৫ জন নোভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। তাতে সবমিলিয়ে রাজ্যে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে ৫ লক্ষ ৩৮ হাজার ৩৪৩ হয়েছে। এই মুহূর্তে রাজ্যে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ১৬ হাজার ৯০৩।
দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা কমায় প্রশাসন যেমন স্বস্তিতে, একই ভাবে দৈনিক সুস্থতাও আশার আলো জুগিয়েছে। গত ১১ ডিসেম্বর থেকেই দৈনিক আক্রান্তের তুলনায় দৈনিক সুস্থতা বেশি। এ দিন সেই ব্যবধান আরও বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৩৪২ জন রোগী করোনামুক্ত হয়েছেন। মোট আক্রান্তের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৫ লক্ষ ১২ হাজার ৩৯ জনই সেরে উঠেছেন। বর্তমানে রাজ্যে সুস্থতার হার ৯৫.১১ শতাংশ।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
আরও পড়ুন: কোভিডের নয়া প্রজাতিকে কি রুখতে পারবে প্রতিষেধক? বাড়ছে উদ্বেগ
প্রতিদিন যত সংখ্যক মানুষের কোভিড টেস্ট হয় এবং তার মধ্যে যত জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে তাকে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার বলা হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় ২৯ হাজার ৪২২টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। তবে আক্রান্তের সংখ্যা কম থাকায় এ দিন সংক্রমণের হার কমে ৫.১৫ শতাংশ হয়েছে।
তবে সংক্রমণ এবং সুস্থতা আশা জোগালেও, রাজ্যে করোনার প্রকোপে মৃত্যু অব্যাহত। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪১ জন করোনা রোগী প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনাতেই ৯ জন করে রোগীর মৃত্যু হয়েছে। সবমিলিয়ে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৯ হাজার ৪০১ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
সমস্ত জেলাগুলির মধ্যে সংক্রমণ ও মৃত্যুর নিরিখে কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনাই সবচেয়ে এগিয়ে। কলকাতায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষ ২০ হাজার ১১৫। উত্তর ২৪ পরগনায় এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ১৩ হাজার ৪৩০ জন কোভিড-১৯ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। করোনার প্রকোপে শহর কলকাতায় ২ হাজার ৮৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে সবমিলিয়ে। উত্তর ২৪ পরগনায় করোনার প্রকোপে প্রাণ গিয়েছে ২ হাজার ২৪৬ জনের।
এ ছাড়াও হাওড়া (৯৭৪), দক্ষিণ ২৪ পরগনা (৬৫১), হুগলি (৪৪৯), পশ্চিম মেদিনীপুর (২৮৬), নদিয়া (২৭৪), পূর্ব মেদিনীপুর (২৬৪), দার্জিলিং (১৯৫), জলপাইগুড়ি (১৫৪) পশ্চিম বর্ধমান (১৪৩), মুর্শিদাবাদ (১৪১) এবং মালদহে (১০৯) বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনা ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় হাওড়ায় ৫ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। হুগলি এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৪ জন করে রোগী প্রাণ হারিয়েছেন। নদিয়া এব পশ্চিম মেদিনীপুরে ২ জন করে রোগীর প্রাণ গিয়েছে। পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুর এবং জলপাইগুড়িতে ১ জন করে রোগী মারা গিয়েছেন।
আরও পড়ুন: নয়া করোনা ঘিরে উদ্বেগ, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্রিটেনের সঙ্গে বিমান সংযোগ বন্ধ
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)