প্রতীকী ছবি।
করোনার দাপট ঠেকাতে কলকাতা এখন চ্যালেঞ্জ রাজ্য প্রশাসনের কাছে। এরই মধ্যে আজ, শনিবার থেকে রমজান মাস শুরু হচ্ছে। করোনা রুখতে শহরের বিভিন্ন সংখ্যালঘু এলাকার বাসিন্দাদের বাড়িতে থেকে প্রার্থনা করার আবেদন জানিয়েছেন মুসলিম ধর্মগুরুরা।
রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ বৃহস্পতিবার নবান্নে বলেন, ‘‘মূলত ঘনবসতি ও ঘিঞ্জি এলাকায় সংক্রমণের হার বেশি। প্রশাসন ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের ঘরে থাকতে বলছে, ঘরে ঢুকিয়েও দিচ্ছে। কিন্তু ঘরের মধ্যেও যে শারীরিক দূরত্ব থাকা দরকার, ঘনবসতির ওই সব এলাকায় তা বজায় রাখা সম্ভব নয়। এটা আমাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।’’ মুখ্যসচিবের কথার রেশ ধরে নাখোদা মসজিদের ইমাম সফিক কাশেমি শুক্রবার বলেন, ‘‘জানি, রাজাবাজার, কড়েয়া, বন্দর এলাকার সংখ্যালঘু মানুষদের ঘুপচি ঘরে অনেক কষ্ট করে থাকতে হয়। ওই সমস্ত এলাকার বাসিন্দাদের কাছে হাতজোড় করে বলছি, আগামী এক মাস কষ্ট করে ঘরে থেকে নমাজ পড়ুন। বাড়ির বাইরে অকারণে বেরোবেন না। রমজান মাসটা মসজিদে না-গিয়ে বাড়িতেই নমাজে শামিল হন।’’
রেড রোডে ইদের নমাজের ইমাম তথা অল ইন্ডিয়া মিল্লি কাউন্সিলের রাজ্য শাখার সভাপতি ফজলুর রহমানের কথায়, ‘‘দেশের স্বার্থে রমজান মাসে নিজ নিজ বাড়িতে নমাজ পড়ুন। তারাবীহ নমাজ বাড়িতেই পড়বেন। আমিও রমজান মাসে বাড়িতে নমাজ পড়ব।’’
রমজান মাসে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের বেশির ভাগই দিনভর রোজা রাখেন। রোজা রাখার জন্য ভোরে ঘুম থেকে উঠে সেহরি খেতে হয়। অন্যান্য বছর সংখ্যালঘু এলাকায় ভোরে সেহরি খাওয়ার জন্য অনেক যুবক রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। ঘুম ভাঙানোর জন্য দল বেঁধে রাস্তায় নেমে গানও গাওয়া হয়। কিন্তু এখন পরিস্থিতি আলাদা। বঙ্গীয় ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মহম্মদ ইয়াহিয়া বলেন, ‘‘ঘুম ভাঙানোর জন্য মোবাইল, ঘড়িতে অ্যালার্ম দিন। বাড়ির বাইরে ভিড় চলবে না।’’
আরও পড়ুন: ছোট্ট মেয়েকে গ্রামে রেখেই করোনার লড়াইয়ে মা-বাবা
আরও পড়ুন: ‘অক্সিজেন দিচ্ছে না’, কৃষ্ণনগরে হাসপাতাল থেকে ‘পালালেন’ বৃদ্ধ
রমজান মাসে অন্যান্য বছর সন্ধ্যায় ইফতারের সময়ে শহরের মসজিদ এলাকায় ভিড় থাকে। বঙ্গীয় ইমাম অ্যাসোসিয়েশন বিভিন্ন মসজিদ কমিটিকে ইতিমধ্যেই চিঠি লিখে জানিয়েছে, ‘‘রমজান মাসেও মুসলিমরা যেন বাড়িতে থেকেই নমাজ আদায় করেন। মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত আজান চলবে। ইমাম সাহেব প্রতি মসজিদের ২-৩ জনকে নিয়ে নমাজ পড়বেন।’’ ইয়াহিয়া বলেন, ‘‘করোনা মোকাবিলায় আমাদের এক হতেই হবে। প্রশাসনিক নির্দেশ সকলকেই মানতে হবে।’’ হুগলির ফুরফুরা শরিফের মুখ্য নির্দেশক ত্বহা সিদ্দিকীরও আহ্বান, ‘‘বাড়িতে বসে ইবাদত করুন। আপনাদের সতর্কতামূলক পদক্ষেপেই দেশের ভাগ্য নির্ধারিত হবে।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)