দূরে দূরে: জনবিরল নমাজ বহরমপুরের খাগড়ার একটি মসজিদে। শুক্রবার। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
প্রাণঘাতী ভাইরাসের হামলা এড়াতে ভিড় বারণ হয়েছে ধর্মস্থানেও। শুক্রবার (জুম্মা) সমবেত প্রার্থনার বিশেষ দিনের দুপুরেও তাই মসজিদ প্রায় জনশূন্য। আজানের সুর অবশ্য অব্যাহত।
ভিতরে তকতকে মেঝেয় ফুট দুয়েক দূরত্বে বসে নমাজ পড়ছেন মাত্র পাঁচ-ছ’জন। শুক্রবার এই বিরল দৃশ্য দেখা গেল রাজ্য জুড়ে।
নাখোদা মসজিদের লাগোয়া কলুটোলা, জাকারিয়া স্ট্রিটে জুম্মার দুপুরে সাধারণত নমাজির ভিড়ে পা ফেলার জায়গা থাকে না। এ দিন ওই তল্লাট সুনসান। নাখোদার ভিতরে মসজিদের চার-পাঁচ জন কর্মচারী দূরত্ব রেখে নমাজ পড়েন। উত্তরবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর-মালদহ থেকে মুর্শিদাবাদ-বর্ধমান— সর্বত্রই কমবেশি এক চিত্র। কয়েকটি প্রত্যন্ত মুসলিম-প্রধান এলাকাতেও বেশির ভাগ মানুষ বাড়িতেই নমাজ পড়েছেন।
করোনা প্রতিরোধে দেশজোড়া লকডাউনের সিদ্ধান্তের প্রতি সংহতি জানিয়ে বাড়িতে নমাজ পড়ার জন্য আগেই আবেদন করেছিলেন ইমামেরা। তাতে ইতিবাচক ফল মিলেছে অনেকটাই। বহরমপুরের কুমোরপাড়া জামা মসজিদে হাজির ছিলেন সাকুল্যে চার জন। মুর্শিদাবাদের ৭০ শতাংশ মসজিদেই এই ছবি। উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর, চোপরা, গোয়ালপোখর, চাকুলিয়া থেকে শুরু করে মালদহের কালিয়াচক, দার্জিলিঙের ফাঁসিদেওয়ার ছবিও অন্যান্য জুম্মাবারের নিরিখে অবিশ্বাস্য জনশূন্য। বর্ধমানের মসজিদে হাজির বড়জোর ৮-১০ জন। ইমামদের ডাকে সাড়া দিয়েছে রানিগঞ্জ, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া থেকে মেদিনীপুর, হলদিয়াও। তবে জলপাইগুড়ি, কোচবিহারের কয়েকটি মসজিদে সামান্য ভিড় হয়েছিল। উত্তর ২৪ পরগনায় দেগঙ্গা, শাসন, গোলাবাড়ি, দত্তপুকুর, বামনগাছির কিছু কিছু মসজিদে কিছুটা ভিড় দেখা যায়। কদম্বগাছির মসজিদ-কর্তার দাবি, জুম্মার নমাজের জামাতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা হয়েছে। নাখোদার ইমাম শাফিক কাশমির কথায়, ‘‘কেন মসজিদে আসতে নিষেধ করা হচ্ছে, সেটা বুঝতে হবে। মানুষ না-বাঁচলে কোনও ধর্ম, মসজিদ-মন্দির— কিছুই থাকবে না।’’