গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
দৈনিক আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা আগের থেকে সামান্য কমলেও রাজ্যে ফের ২ হাজারের বেশি সংক্রমিতের সন্ধান মিলল। তবে দৈনিক সুস্থতার হার বাড়ায় খানিকটা হলেও স্বস্তিতে স্বাস্থ্য দফতর। যদিও গোটা রাজ্যের মধ্যে কলকাতায় দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে।
শুক্রবার রাতে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর থেকে প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৯৫ জন। যা রাজ্যের সমস্ত জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি। দৈনিক আক্রান্তের নিরিখে এ শহরের পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। ওই জেলায় এক দিনে ৫২৪ জনের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়েছে।
উত্তর ২৪ পরগনা ছাড়াও উদ্বেগজনক পরিস্থিতি দক্ষিণ ২৪ পরগনা (১৫৩) হুগলি (১১৮) এবং হাওড়া (১০০) জেলার। এই তিন জেলাতেই গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ বা তার বেশি।
আরও পড়ুন: কোভিড টিকা কোথায়, কী ভাবে, পদ্ধতি জানাল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক
স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, কলকাতায় এখনও পর্যন্ত মোট ১ লক্ষ ১৮ হাজার ৮১৪ জনের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। যদিও এর মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ লক্ষ ১১ হাজার ৩৮০ জন। ফলে এই মুহূর্তে শহরে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ৫৮৫। দৈনিক সুস্থতার হার ৯৩.৭৪ শতাংশ।
কলকাতার মতোই গোটা রাজ্য়ে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা নেহাত কম হয়। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত রাজ্য জড়ে ৫ লক্ষ ৩২ হাজার ৬৯৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তবে করোনার থেকে ৫ লক্ষ ৪ হাজার ৩৫৩ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ফলে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৬৫-তে।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
বৃহস্পতিবারের তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে কোভিড টেস্টের সংখ্যা কমার পাশাপাশি নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যাও কমেছে। যার ফলে গত ২৪ ঘণ্টায়‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বাড়েনি। প্রতি দিন যে সংখ্যক কোভিড টেস্ট করা হয়, তার মধ্যে যত শতাংশের রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাকেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪২ হাজার ৩৫৫টি কোভিড টেস্ট হয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ২৩৯টি রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। ফলে সংক্রমণের হার ৫.২৯ শতাংশ বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
এক দিনে ফের রাজ্যে ২ হাজারের বেশি সংক্রিমত হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বেগে স্বাস্থ্য দফতর। তবে তার মধ্যেই আশা জাগাচ্ছে দৈনিক সুস্থতার হার। শুক্রবার তা দাঁড়িয়েছে ৯৪.৬৮ শতাংশে। বৃহস্পতিবার তা ছিল ৯৮.৫৬ শতাংশ।
করোনার ধাক্কায় যাত্রী পরিবহণে রেলের ক্ষতি ৪৮ হাজার কোটি
করোনায় সুস্থতার হার বাড়ার পাশাপাশি কমেছে এক দিনে মৃতের সংখ্য়াও। বৃহস্পতিবার ৪৪ জন মারা গিয়েছিলেন। সেই তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত গোটা রাজ্য়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট ৯ হাজার ২৭৭ জন মারা গিয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। এর মধ্যে শুধুমাত্র কলকাতাতেই মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৮৪৯ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় এ শহরে মারা গিয়েছেন ১০ জন কোভিড রোগী।
স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব অনুযায়ী, রাজ্য জড়ে দৈনিক ৪২ জন কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনায় সবচেয়ে বেশি ১৬ জন মারা গিয়েছেন। নদিয়া এবং হাওড়ায় ৪ জন করে মৃত্যুর পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুরে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া, গত ২৪ ঘণ্টায় মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম বর্ধমান এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১ জন করে সংক্রমিত মারা গিয়েছেন।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)