—ফাইল চিত্র।
রাজ্যে অক্সিজেন প্লান্ট ও সংশ্লিষ্ট পরিকাঠামো গড়ার জন্য জমি দিতে চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দিকে। অক্সিজেনের সঙ্কট মেটাতে নানা ভাবে উদ্যোগী হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন চিঠি লিখে। কিন্তু রাজ্য প্রশাসনের খবর, সেই সঙ্কট মেটানোর ক্ষেত্রে কার্যত বাধা সৃষ্টি করছে দিল্লির খামখেয়ালি মনোভাব ও টালবাহানা। এই পরিস্থিতিতে মোদীকে ফের চিঠি লিখেছেন মমতা। সেই চিঠিতে দিল্লির মনোভাবের কথা উল্লেখ করে দ্রুত সিদ্ধান্ত জানাতে বলেছেন তিনি।
ওই চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, পশ্চিমবঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে ৭০টি প্রেশার সুইং অ্যাডজ়র্পশন (পিএসএ) অক্সিজেন প্লান্ট বসানোর কথা ছিল কেন্দ্রের। হাসপাতালে অক্সিজেনের চাহিদা মেটাতে এই প্লান্ট খুবই উপযোগী। কারণ, এর মাধ্যমে হাসপাতালেই বাতাস থেকে অক্সিজেন তৈরি করা হয়। কিন্তু চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গকে ক’টি পিএসএ প্লান্ট দেওয়া হবে, সেই বিষয়ে নিত্যদিন টালবাহানা করে চলেছে দিল্লি। কারা কাজ করবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গকে জানানো হয়েছে, প্রথম দফায় মাত্র চারটি পিএসএ দেওয়া হবে। পরে আর ক’টি দেওয়া হবে, তা-ও স্পষ্ট করে বলা হচ্ছে না। কেন কোটা কমানো হচ্ছে, সেই বিষয়েও ধোঁয়াশা তৈরি করেছে দিল্লি।
কোভিড আবহে অক্সিজেন রোগীদের প্রাণ বাঁচানোর অত্যাবশ্যক সামগ্রী। রাজ্যে অক্সিজেন সিলিন্ডারের ঘাটতি রয়েছে। তা ছাড়া চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত অনেকেই বলছেন, অনেক রোগী হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। তাঁদের সিলিন্ডার প্রয়োজন। সিলিন্ডার পুনরায় ভর্তি করাও সময়সাপেক্ষ। সে-দিক থেকে পিএসএ আধুনিক প্রযুক্তি এবং হাসপাতালের মতো প্রতিষ্ঠানে অত্যন্ত উপযোগী।
মুখ্যমন্ত্রী চিঠিতে লিখেছেন, রাজ্য সরকার নিজেদের তহবিল থেকে অক্সিজেন প্লান্ট বসানোর তোড়জোড় করছে। কিন্তু দিল্লির টালবাহানার জন্য সেই কাজেও ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। ‘রাজ্য নিজেদের টাকায় পিএসএ প্লান্ট বসাতে চায়। কিন্তু সেই প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। রাজ্যের সংস্থা সাপ্লিমেন্টারি পিএসএ বসাতে চাইছে। কিন্তু দিল্লির টালবাহানায় তা-ও বসানো যাচ্ছে না,’ লিখেছেন মমতা। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁর আবেদন, পশ্চিমবঙ্গের জন্য দ্রুত পিএসএ-র ন্যায্য বরাদ্দ নিশ্চিত করা হোক।
যুক্তরাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতি অক্ষুণ্ণ রেখেই মুখ্যমন্ত্রী চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, একসঙ্গে কাজ করে কোভিডের বিরুদ্ধে আমরা জিতব। এই বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে আপনার হস্তক্ষেপ এবং সহযোগিতা চাইছি।’