মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি পিটিআই।
এমনিতেই কিট চেয়ে ‘পাওয়া যাচ্ছে না’। তার উপরে যে কিট পাঠানো হচ্ছে, তা ‘ত্রুটিযুক্ত’। সেই সমস্যার সমাধান না করে উল্টে রাজ্যের নামে অযথা বদনাম করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিট সমস্যার দায় কার, বুধবার নবান্নে প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ রাজ্যে করোনার পরীক্ষা কম হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছিল। তার দায় ঠেলা হচ্ছিল রাজ্য সরকারের উপরে। রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের দাবি, এ বার রাজ্যের বক্তব্য সামগ্রিক ভাবে তুলে ধরা হল। গোটা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য যে ক্ষুব্ধ এবং বিরক্ত, এ দিন তা বুঝিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীই।
রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তিন ধরনের করোনা পরীক্ষার কিট রয়েছে তাদের কাছে। প্রথমত, অ্যান্টিবডি কিট। যে কিটের মাধ্যমে পরীক্ষা আপাতত বন্ধ রাখতে বলেছে কেন্দ্র। দ্বিতীয়ত, আরটি পিসিআর কিট। ওই কিটেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। তার ফলে সেগুলি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া এই কিটগুলির ক্ষেত্রে কোনও এলাকা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষাগারে নিয়ে যাওয়ার জন্য এক ধরনের মাধ্যম বা মিডিয়ার প্রয়োজন হয়। রাজ্যের দাবি, আইসিএমআর বা নাইসেড তা খুব অল্প সরবরাহ করেছে। ফলে কিট থাকা সত্ত্বেও বেশি সংখ্যক পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। তৃতীয়ত, অ্যান্টিজেন কিট। রাজ্যের কোনও হাসপাতালে ওই কিট নেই।
আরও পড়ুন: রিপোর্টের ক্ষেত্রে আশা করি কেন্দ্রীয় দল নিরপেক্ষ হবে: মুখ্যসচিব
নবান্নে মমতা এ দিন বলেন, ‘‘বাংলাকে বদনাম করা হচ্ছে। র্যাপিড পরীক্ষার কিট যা পাঠিয়েছিল, সব ফেরত নিয়েছে কেন? মানে সব ত্রুটিপূর্ণ। কার দোষ? অনেক বড় বড় কথা বলেছে পিপিই নিয়ে। কোথায়? সাত হাজার দিয়েছে। আমরা দিয়েছি ৪ লক্ষ ১৯ হাজার। আরও বরাত দেওয়া আছে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘বিজিআই-আরটিপিসিআর-ও ফেরত নিয়েছে। অ্যান্টিজেন কিট রাজ্যের হাসপাতালে পাওয়া যায় না। তা হলে কিট হাতে থাকল কোথায়? আমরা করিনি বলে যারা বলে বেড়াচ্ছিল, তারা উত্তর কী দেবে? আইসিএমআর আর নাইসেড হয় ফেরত নিচ্ছে, না হয় ত্রুটিপূর্ণ বলছে। না হলে ঘাটতি আছে। ২৫০০ ভিটিএম পেয়েছি। পরীক্ষা করেছি ৭০৩৭। ভিটিএম দুটো করে লাগে, একটা করে দিয়েছে।’’
রাজ্য জানিয়েছে, র্যাপিড পরীক্ষার ১০ হাজার কিট ত্রুটিপূর্ণ। তা দিয়ে এর মধ্যে ২২০টি পরীক্ষা হয়েছিল। সেই ফলগুলি কাজে লাগবে না। এখন আপাতত পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে আইসিএমআর-এর নির্দেশ অনুযায়ী। আরএনএ-এক্সট্র্যাক্টরও কম পাঠানো হয়েছে। ভিটিএম প্রতি পরীক্ষার জন্য দু’টো করে লাগে। কিন্তু এই যন্ত্র মাত্র আড়াই হাজার পাঠানো হয়েছে। রাজ্য সরকার নিজে ৪৫ হাজার যন্ত্রের বরাত দিয়েছে। সরকারের বক্তব্য, প্রয়োজনীয় কিট একবারে না পেলে মুশকিল হচ্ছে। হাত খালি করে সব কিট ব্যবহার করে ফেলা চলে না। ফলে মাঝে মাঝেই থমকে যেতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: আপাতত ঘরই মন্দির, মসজিদ, গুরুদ্বার: মমতা
এ দিকে হাওড়ায় র্যাপিড টেস্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পুলিশ কর্মী ও স্বাস্থ্যর্কমীদের পলিম্যরাইজড চেন রিঅ্যাকশন বা পিসিআর পদ্ধতিতে করোনার পরীক্ষা শুরু হল। বুধবার হাওড়া পুরসভার শৈলেন মান্না স্টেডিয়াম, সাউথ হাওড়া জেনারেল হাসপাতাল ও সত্যবালা হাসপাতালে এই পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার কাজ শুরু করেছে হাওড়ার স্বাস্থ্য দফতর।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)