প্রতীকী ছবি।
ভিন্ন ভাবে তাঁদের মূল্যায়ন করে সমাজ। করোনা-পরিস্থিতিতে ক্রমশ তাঁদের সম্পর্কে নতুন মূল্যায়নের পথ তৈরি করছেন বন্দিরা।
লৌহকপাটের অন্দরে মাস্ক তৈরি হচ্ছে। ত্রাণ তহবিলে অর্থসাহায্য করছেন সাজাপ্রাপ্ত বন্দিরা। এ বার সেই তালিকায় যুক্ত হল পার্সোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) তৈরি। জেলে কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত সরকারি কর্মীরা এক দিনের বেতন ত্রাণ তহবিলে দিচ্ছেন। জেলে করোনা নিয়ে গুজব ছড়ালে শাস্তিস্বরূপ পাঠানো হচ্ছে সেলে। এমন ঘটনা ঘটেছে একটি সেন্ট্রাল জেলে। চুম্বকে এই হল জেলের করোনা-চিত্র।
রাজ্যের আটটি সেন্ট্রাল জেলেই মাস্ক তৈরি হচ্ছে। পিপিই তৈরি করছেন বহরমপুর সেন্ট্রাল জেলের বন্দিরা। ইতিমধ্যে প্রায় ২০টি পিপিই তৈরি করেছেন তাঁরা। ওই জেলে তা ব্যবহার করছেন চিকিৎসকেরা। অন্য জেলেও তা পাঠানো হচ্ছে।
পিপিই তৈরিতে সরকারি নির্দেশিকা মানা হচ্ছে তো? কারাকর্তা জানান, সরকারি নিয়ম মেনেই করার চেষ্টা হচ্ছে। ওই পিপিই কারা কখন ব্যবহার করছেন? কারা দফতর সূত্রে জানানো হয়, জেলে প্রত্যেক বন্দিকে পরীক্ষা করছেন চিকিৎসকেরা। তাতেই এই পিপিই ব্যবহার করা হচ্ছে। মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে রাজ্যের আটটি সেন্ট্রাল জেলে মাস্ক তৈরির কাজ চলছে। তবে দমদম জেলে গত ২১ মার্চ বন্দি-তাণ্ডবের ফলে সেখানে মাস্ক তৈরির কাজ ব্যাহত হয়। ফের সেই কাজ শুরু হয়েছে। বন্দিদের তৈরি বাইরেও ব্যবহার করা হয়েছে।
মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেলে পাঁচ দণ্ডিত বন্দি ব্যক্তিগত ভাবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জরুরি ত্রাণ তহবিলে অর্থ দিয়েছে। সেখানকার দণ্ডিত বন্দিদের স্বনির্ভর গোষ্ঠী অনুদান দিয়েছে। ওই তহবিলে এক দিনের বেতন দিচ্ছেন বহরমপুর জেলের কর্মী-অফিসারেরা।
করোনার জেরে রাজ্যের বিভিন্ন জেল থেকে প্যারোলে এবং অন্তর্বর্তী জামিনে আপাতত তিন মাসের জন্য ছাড়া পাচ্ছেন দণ্ডিত ও বিচারাধীন কিছু বন্দি। মুক্তির আগে তাঁদের শারীরিক পরীক্ষা করছে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের নেতৃত্বাধীন টিম। তাদের রিপোর্ট জমা পড়ছে আদালতে। লকডাউনের পরিস্থিতিতে মুক্ত বন্দিদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়ারও ব্যবস্থাও করছে কারা দফতর। তবে কোথাও কোথাও যাতায়াতের অসুবিধার অভিযোগ উঠছে। বাড়িতে যাওয়ার পরে সংশ্লিষ্ট বন্দিকে কোয়রান্টিনে থাকার পরামর্শও দিচ্ছেন সংশোধনাগার-কর্তৃপক্ষ।