গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
এক টানা বেশ কিছু দিন তিন হাজারের কোটায় ঘোরাফেরার পর রাজ্যে দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণ বেশ খানিকটা কমল। সোমবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ২ হাজার ৯৬৭ জন। সেই সঙ্গে সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাটাও এ দিন বেশ চমকপ্রদ।
গত শনি ও রবিবার এ রাজ্যে যথাক্রমে ৩ হাজার ২৩২ এবং ৩ হাজার ২৭৪ জন নতুন করে কোভিড-১৯ ভাইরাসে সংক্রমিত হন। এ দিন তা কমে ২ হাজার ৯৬৩ হয়েছে। তাতে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ৪১ হাজার ৮৩৭।
গত কয়েক দিন ধরে রাজ্যে দৈনিক মৃত্যু ৫০-এর কোটায় ঘোরাফেরা করছিল। মাঝে শনিবার তা কমে ৪৮ হয়। রবিবার ফের তা বেড়ে ৫৭-তে এসে ঠেকে। গত ২৪ ঘণ্টাতেও ৫৮ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আরও পড়ুন: তৃণমূল থেকে রত্না অপসারিত? ধন্দ জিইয়ে থাকায় ধোঁয়াশা কাননেও
তবে এর মধ্যেও রাজ্যে সুস্থতার হার বেশ আশাজনক। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ২৮৫ জন করোনা রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন, এক দিনে সুস্থতার নিরিখে যা এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। সবমিলিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ১ লক্ষ ১১ হাজার ২৯২ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তার জেরে রাজ্যে সুস্থতার হার দাঁড়িয়েছে ৭৮.৪৬ শতাংশ।
প্রতি দিন যত জন রোগীর কোভিড টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যক রোগীর কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ হাজার ২৬৭ জনের করোনা পরীক্ষা হওয়ার পর এ দিন সংক্রমণের হার ৮.৪১ শতাংশে এসে ঠেকেছে, গতকাল যা ৮.৮১ শতাংশ ছিল।
মোট সংক্রমণ ও মৃত্যুর নিরিখে বাকি জেলাগুলির তুলনায় কলকাতাই এগিয়ে রয়েছে এখনও পর্যন্ত। এ দিন শহরে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৬৫ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৩ জন করোনা রোগীর। সেই সঙ্গে সুস্থও হয়ে উঠেছেন ৬৫১ জন।
মৃত্যুর নিরিখে এ দিন কলকাতার পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৭০০ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৬০৫ জন রোগী। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এ দিন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ১৫৮ জন। মৃত্যু হয়েছে ৬ করোনা রোগীর। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২২৩ জন রোগী।
হাওড়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন। নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ১০৪ জন। করোনার প্রকোপে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। এর পাশাপাশি হুগলিতে এ দিন প্রাণ হারিয়েছেন ৪ জন। পশ্চিম মেদিনীপুর, দক্ষিণ দিনাজপুরে ২ জন করে প্রাণ হারিয়েছেন। ১ জন করে প্রাণ হারিয়েছেন পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারে।
আরও পড়ুন: নিট, জেইই স্থগিত রাখতে কেন্দ্রের কাছে আর্জি মমতার
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)