Coronavirus in West Bengal

এক দিনে পাঁচ হাজার নমুনা পরীক্ষায় হ্যাটট্রিক করল স্বাস্থ্য দফতর

মঙ্গলবার প্রথম করোনা নমুনা পরীক্ষায় পাঁচ হাজারের গণ্ডি পেরোয় স্বাস্থ্য ভবন। সে-দিন ৫০০৭টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল। বুধবার সংখ্যাটা ছিল ৫০১০। বৃহস্পতিবার তা হল ৫২০৫।

Advertisement

সৌরভ দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২০ ০২:১২
Share:

ছবি এএফপি।

এক দিনে পাঁচ হাজার নমুনা পরীক্ষায় হ্যাটট্রিক করল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

মঙ্গলবার প্রথম করোনা নমুনা পরীক্ষায় পাঁচ হাজারের গণ্ডি পেরোয় স্বাস্থ্য ভবন। সে-দিন ৫০০৭টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল। বুধবার সংখ্যাটা ছিল ৫০১০। বৃহস্পতিবার তা হল ৫২০৫। স্বাস্থ্য দফতরের খবর, এই নমুনার ৮০ শতাংশই পরীক্ষা করা হয়েছে সরকারি ল্যাবরেটরিতে। বেসরকারি ল্যাবরেটরির অবদান কম। স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, রোজ পাঁচ হাজার নমুনার মধ্যে অন্তত চার হাজার পরীক্ষার ভার বহন করছে সরকারি ল্যাবরেটরি।

এ রাজ্যে প্রথমে পরীক্ষা শুরু করেছে কেন্দ্রীয় গবেষণা সংস্থা আইসিএমআর-নাইসেড। এ-পর্যন্ত তারা পরীক্ষা করেছে ৯৩৫০টি নমুনা। এ দিনের বুলেটিনের তথ্য অনুযায়ী ৯৮৭২টি নমুনা পরীক্ষা করে দ্বিতীয় স্থানে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ। ১৭ মার্চ থেকে এসএসকেএমে পরীক্ষা হয়েছে ৮২৫৭টি নমুনা। স্বাস্থ্য দফতরের খবর, উত্তরবঙ্গের সাফল্যের পিছনে পুল টেস্টের বড় ভূমিকা রয়েছে। বেসরকারি ল্যাবের মধ্যে ডক্টর লাল প্যাথল্যাব ৮৭৬৭টি নমুনা পরীক্ষা করেছে। স্বাস্থ্যকর্তাদের বক্তব্য, লাল প্যাথ ল্যাবের বেশির ভাগ নমুনা পাঠিয়েছে সরকারি ল্যাব। কার্যত সরকারি ল্যাবেরই একটি ইউনিট হিসেবে কাজ করছে সংশ্লিষ্ট ল্যাব।

Advertisement

আরও পড়ুন: রাজ্যে করোনায় মৃত আরও ৮, তিন অঙ্কে কলকাতা

স্বাস্থ্য অফিসারদের একাংশের বক্তব্য, ৬ এপ্রিল থেকে এ দিন পর্যন্ত অ্যাপোলো গ্লেনেগ্‌লসে পরীক্ষা হয়েছে মাত্র ৮৩৩টি! একই দিনে কাজ শুরু করে টাটা মেডিক্যাল সেন্টার ১৮৮০টি নমুনা পরীক্ষা করেছে। ১৭ এপ্রিল কাজে নেমে কমান্ড হাসপাতাল পরীক্ষা করেছে ৩৪৭টি নমুনা! সিএনসিআই ২২ এপ্রিল থেকে ৬০৭টি নমুনা পরীক্ষা করেছে। ২৪ এপ্রিল থেকে আরজি কর পরীক্ষা করেছে ৩৭৩৫টি নমুনা। একই দিনে কাজে নেমে সুরক্ষার পরীক্ষার সংখ্যা ১৯৮৯! ১ এপ্রিল কাজ শুরু করে স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন পরীক্ষা করেছে ৫৭২০টি নমুনা। ২৪ মার্চ থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষা হয়েছে ৪০০৯টি নমুনা।

স্বাস্থ্য অফিসারদের একাংশ জানান, আরটি-পিসিআরের পরীক্ষা করতে দক্ষতা দরকার। রোজ পাঁচ হাজারের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কয়েকটি ল্যাবে প্রচণ্ড চাপ পড়ছে চিকিৎসক, গবেষক, টেকনোলজিস্টদের উপরে। তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়লে কী হবে, সেই আশঙ্কা স্বাস্থ্য ভবনকে ঘিরে ধরেছে।

আরও পড়়ুন: নিয়ন্ত্রণ রেখেই বিধি শিথিলের পক্ষে নবান্ন

স্বাস্থ্য ভবনের খবর, আরও বেশি করে নমুনা পরীক্ষার জন্য বেসরকারি ল্যাবগুলিকে অনুরোধ করা হয়েছে। আজ, শুক্রবার থেকে বর্ধমানে আরটি-পিসিআরে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। আরও একটি বেসরকারি ল্যাব নমুনা পরীক্ষার অনুমোদন পেতে চলেছে।

স্বাস্থ্য দফতরের করোনা-কর্মকাণ্ডে যুক্ত এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘অন্য রাজ্য যে এক দিনে ১০ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করছে, তার বড় কারণ, বেসরকারি ল্যাবেও প্রচুর পরীক্ষা হচ্ছে। এখানে তার খামতি আছে।’’ এই পরিস্থিতিতে দিল্লির একটি ল্যাবকে পরীক্ষার আউটসোর্সিং করতে রাজ্যের আপত্তি নেই। ওই চিকিৎসক বলেন, ‘‘রিপোর্ট ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মিলছে না। ফলে নেগেটিভ রোগীদের আইসোলেশন বা সারি ওয়ার্ডে রাখতে হচ্ছে। এর ফলে কিছু ক্ষেত্রে দেরি হচ্ছে চিকিৎসায়। সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীদের মধ্যে সংক্রমণের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।’’

স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তা বলেন, ‘‘আস্তে আস্তে সব সমস্যারই সমাধান হচ্ছে। নমুনা যেমন বাড়ছে, তেমনই বাকি সমস্যারও সমাধান হয়ে যাবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement