ছবি: পিটিআই।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ চিহ্নিত করতে সরকারি হাসপাতালের ফিভার ক্লিনিকে কী করণীয়, তা নির্দিষ্ট করে দিল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। মঙ্গলবার এই বিষয়ে একটি নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। তাতে ‘ইনফ্লুয়েঞ্জা লাইক ইলনেস’ বা ইলি এবং ‘সিভিয়র অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইলনেস’ বা সারি-র উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের জন্য রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ, জেলা, মহকুমা ও ব্লক স্তরের হাসপাতালে বাধ্যতামূলক ভাবে ফিভার ক্লিনিক চালু করতে বলা হয়েছে। কোভিড১৯-এর সংক্রমণ ঠেকাতেই এই ব্যবস্থা বলে জানানো হয়েছে ওই নির্দেশিকায়।
গত কয়েক দিনে রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক ভাবে জ্বর, শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের পরবর্তী ক্ষেত্রে নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়েছে। নীলরতন সরকার হাসপাতালের মতো কিছু ক্ষেত্রে বেশ কয়েক জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীকে কোয়রান্টিন বা নিভৃতবাসে পাঠাতে হয়েছে। এই অবস্থায় সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবেই এ দিনের নির্দেশিকা বলে স্বাস্থ্য ভবনের খবর।
ওই নির্দেশিকা অনুযায়ী, বহির্বিভাগে জ্বর, কাশি, গলাজ্বালা, শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের প্রথমেই অন্য রোগীদের থেকে আলাদা করে ফেলতে হবে। ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো উপসর্গযুক্ত (জ্বর, কাশি, গলাজ্বালা, শ্বাসকষ্ট) রোগীদের পাঠাতে হবে ফিভার ক্লিনিকে। ফিভার ক্লিনিকে আসা রোগীদের দু’ভাগে ভাগ ভাগ করা হয়েছে। ক্যাটেগরি ‘এ’-র মধ্যে আবার চার ধরনের গ্রুপ। যাঁরা করোনা প্রভাবিত এলাকা থেকে গত ১৪ দিনের মধ্যে ফিরেছেন, আক্রান্তের সংস্পর্শে এসেছেন, তাঁরা এবং এই ধরনের উপসর্গযুক্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা রয়েছেন প্রথম গ্রুপে। দ্বিতীয় গ্রুপ: এ-সব কিছুই হয়তো নেই। তা সত্ত্বেও যাঁদের ১৪ দিন হোম কোয়রান্টিন বা গৃহ-নিভৃতবাসে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, এই স্তরে পড়ছেন তাঁরা। শারীরিক কষ্ট বাড়লে তাঁদের লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। তৃতীয় গ্রুপে রাখা হয়েছে ইনফ্লুয়েঞ্জার উপসর্গের পাশাপাশি ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের, যাঁদের অন্য অসুখ (হৃদ্রোগ, ফুসফুস, কিডনি, লিভারে সংক্রমণ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস, ক্যানসার) রয়েছে। এই ধরনের রোগীদের লেভেল টু হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে লালারসের নমুনা সংগ্রহ করতে হবে। চতুর্থ গ্রুপে রয়েছেন সারি-রোগীরা। হাসপাতালে ভর্তির পরে তাঁদেরও নমুনা সংগ্রহের কথা বলা হয়েছে।
ক্যাটেগরি ‘বি’-কে খুব বেশি গ্রুপে ভাগ করা হয়নি। কারও হয়তো কাশি, গলাজ্বালা বা শ্বাসকষ্ট নেই। কিন্তু জ্বর আছে। এমন রোগীদের এই ক্যাটেগরিতে রাখা হয়েছে। জ্বর কেন হল, সেটা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে চিকিৎসকদের। যদি জ্বর আসার কোনও ব্যাখ্যা না-পাওয়া যায়, তা হলে লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠাতে হবে।
দু’ধরনের ক্যাটেগরিতেই নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টের ভিত্তিতে করোনা-নির্দেশিকা মেনে পরবর্তী পদক্ষেপের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এই নির্দেশিকার হাত ধরে রাজ্যে করোনা নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা এক ধাক্কায় অনেকখানি বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা।