ছবি: সংগৃহীত।
বীরভূমের সভামঞ্চ থেকে রাজ্যের করোনা বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য তথা সরকারি চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরীর মন্তব্যের জেরে সোমবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক মহলে অসন্তোষ তৈরি হল। বীরভূমের সিউড়িতে ‘কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্কে’র সভামঞ্চে অভিজিৎবাবুর বক্তব্য ছিল, কলকাতার বড় হাসপাতালের চিকিৎসক-অধ্যাপকদের একাংশ অহেতুক আতঙ্কিত হয়ে করোনা রোগীর চিকিৎসায় জুনিয়র চিকিৎসকদের এগিয়ে দিচ্ছেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘‘আমার করোনা হলে আইডি (বেলেঘাটা) হাসপাতালে ভর্তি হব, পরিষ্কার বলে দিলাম। মেডিক্যাল কলেজে যাব না। মেডিক্যাল কলেজে অধ্যাপকেরা থাকেন। এই মুহূর্তে সব থেকে গন্ডগোল করছেন বড় বড় ডাক্তার, অধ্যাপকেরা। কারণ, ওঁরা জানলার পাশ থেকে রোগী দেখে ছোটদের বলছেন, ‘তোরা দেখ’।’’
এ দিন সরকারি চিকিৎসকের বক্তব্য সংবাদমাধ্যমে জানার পরই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র চিকিৎসকদের মধ্যে শোরগোল পড়ে যায়। তাঁদের একাংশের বক্তব্য, কীসের ভিত্তিতে অভিজ্ঞ সরকারি চিকিৎসক এই মন্তব্য করলেন। সিনিয়র চিকিৎসকেরা জুনিয়রদের এগিয়ে দিয়ে নিজেরা রোগী দেখতে যাচ্ছেন না, এমন কোনও তথ্যপ্রমাণ কি তাঁর কাছে রয়েছে। মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘আমরা সকলে দুঃখিত। প্রফেসরদের যেমন ডিউটি দেওয়া হচ্ছে, তাঁরা নিষ্ঠার সঙ্গে তা পালন করছেন। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এ ধরনের মন্তব্য করা হয়েছে কি না দেখা দরকার।’’ অধ্যাপক-চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, করোনা বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য নিজে যদি মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, তাহলে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন কী ভাবে সম্ভব! কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে খবর, এ নিয়ে স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্যকেও চিকিৎসকদের ‘অসন্তোষে’র কথা জানিয়েছেন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষা মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ ধরনের নেতিবাচক মন্তব্য প্রত্যাশিত নয়। উনি খুব অভিজ্ঞ চিকিৎসক। প্রার্থনা করি, উনি যেন সুস্থ থাকেন। কোথাও যেন ওঁকে যেতে না হয়।’’
নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যায় এ দিন অভিজিৎবাবু বলেন, ‘‘মেডিক্যাল কলেজ উপলক্ষ মাত্র। সামগ্রিক ভাবে যে সকল চিকিৎসকেরা নিজেদের ভূমিকা ঠিকমতো পালন করছেন না, তাঁদের সকলের কথা বলতে চেয়েছি। মূল বক্তব্য হল, যাঁরা সব থেকে উঁচু জায়গায় রয়েছেন, তাঁরা ঘোরের মধ্যে রয়েছেন। সেটা না হলেই ভাল হত।’’
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)